অনেক ধড়পাকড়ের পরও এখনো সক্রিয় রয়েছে অনলাইন জুয়ার এজেন্টরা। নতুন করে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর থেকে অনলাইন জুয়ার এজেন্ট বিজয় শেখকে আবারও আটক করার পর থেকে বিষয়টি আবার সামেেন এসেছে।
গতকাল শুক্রবার ভোরের দিকে তাকে অনলাইন জুয়ায় ব্যবহৃত মোবাইল ও চ্যানেলসহ আটক করে পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার সময় থেকে মুজিবনগর থানার ওসি মেহেদী রাসেলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি বড় টিমি তার বাড়িতে অভিযান শুরু করে। আটক বিজয় শেখ শিবপুর গ্রামের মৃত শাহাদুল শেখের ছেলে।
গ্রেফতারকালে আসামীর নিকট হতে স্টেনলি মেইন, ওয়ান এক্স বেট নামক অনলাইন জুয়া চ্যানেল ও এজেন্ট সীমসহ ৩ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।
১০ আগষ্ট বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক অনলাইন জুয়াসহ অনলাইনের মাধ্যমে সকল অবৈধ লেনদেন প্রতিরোধে সরকার জিরো টলারেন্সে উল্লেখ করে সকল গণমাধ্যমকে বিবৃতি দিয়েছে। অনলাইন জুয়া নিয়ে পুনরায় মেহেরপুর প্রতিনিদিনের অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে অনলাইন জুয়া নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অনলাইন জুয়ার এজেন্ট বদরুদ্দোজা রয়েলকে আটক করা হয়েছিলো গত বছরের ২৪ আগষ্ট। রয়েল পুলিশের কাছে বিজয় শেখসহ ১৫ জনের নাম করে একটি স্বীকারোক্তি দিয়েছিলো। সেই স্বীকারোক্তী অনুযায়ী তদন্তে বিজয় শেখের সম্পৃক্ততার সত্যতা মেলে। গত ৭ জুন তাকে প্রথম বার আটক করা হয়। কিছুদিন হাজত বাস করার পরসে পুনরায় অনলাইন জুয়ার কার্ক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে প্রতিদিনই কোটি কোটি টাকা পাচার হচ্ছে দেশের বাহিরে। এতে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি বিপথে যাচ্ছেন তরুণ ও যুবকরা। পুলিশের তথ্যমতে মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় দুই শতাধিক তরুণ যুবক এই অনলাইন জুয়ার সাথে জড়িত। তারা অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে নিজেরা কোটি পতি হয়েছে। আর অপরদিকে সর্বশান্ত হচ্ছে সাধারণ তরুণ যুবকরা। পুলিশ গত কয়েক মাসে প্রায় অর্ধশত অনলাইন জুয়ার এজেন্ট আটক করেছে।
গোয়েন্দা সংসস্থার মতে, মেহেরপুর জেলাতে কোনোভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছেনা অনলাইন জুয়ার। রাতারাতিই কোটিপতি বনে যাচ্ছেন অনেকে। জুয়াড়িরা বিভিন্ন অ্যাপস ও সাইট ব্যবহার করে অনলাইনে বিভিন্ন গেমিং বেটিং বা বাজি খেলার সাইটে জুয়ায় মেতে উঠেছে। বিট কয়েন বা ডিজিটাল মুদ্রার (ক্রিপ্টোকারেনসি) মাধ্যমে অনলাইনে জুয়া খেলা হয়। অবৈধ পন্থায় ডিজিটাল মুদ্রা কেনাবেচার লেনদেনে দুই বছরে বছরে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে বলে অনুমান করছে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। রাশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশে এই টাকা পাচার হয়েছে বলে জানান সংস্থ্যাগুলো। রাশিয়া থেকে পরিচালিত এসব অনলাইন জুয়ার সাইট ও অ্যাপস তাদের এজেন্টদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে মেহেরপুর জেলা শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যায়ে পর্যন্ত।