২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হয় ভুটানে, বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ২০২১ সালে এই টুর্নামেন্টই অনূর্ধ্ব-১৯ বছরের খেলোয়াড়দের নিয়ে, সেবারও বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০২২ সালে আবার অনূর্ধ্ব-১৮ বছর বয়সের খেলোয়াড়দের নিয়ে হয়, প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত, রানার্সআপ হয় বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে অনূর্ধ্ব-২০ বছর বয়সের খেলোয়াড়দের নিয়ে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ হয় বাংলাদেশে। সেবারও বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
এ বছর আবার সেই সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ বছর বয়সী খেলোয়াড়দের নিয়ে হচ্ছে। আবার বাংলাদেশ ফাইনালে খেলছে। ভারতের বিপক্ষে তিনবার ফাইনাল খেলছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ভারতকে হারিয়ে একবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। নেপালকে হারিয়ে দুই বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন সময় বয়স পরিবর্তন হলেও চারবারই বাংলাদেশ ফাইনাল খেলেছে এবং আজকে চতুর্থবার নারী ফুটবলের এই ফাইনালে খেলছে বাংলাদেশ।
এসবের দিকে নজর নেই ভারতের। ভারতীয় নারী কোচ শুক্লা দত্ত জানিয়েছেন তারা সাফের প্রতিশোধ নিতে এসেছেন। মরিয়া হয়ে টুর্নামেন্টে লড়াই করছেন। একই সঙ্গে এটাও বলছেন এই টুর্নামেন্টের অতীতে কি হয়েছে সেটা নিয়েও তিনি ভাবছেন না। কোচ বলেন, ‘আমরা ভয় পাচ্ছি না। আমার মেয়েরা বুঝতে পারছে তারা কোথায় ভুল করেছে। আমি উইনিং মেন্টালিটি নিয়ে চলি। মেয়েদের মধ্যেও সেটি দেওয়ার চেষ্টা করি।’
ফরিদপুরের মেয়ে শুক্লা দত্ত। বাংলাদেশে আসলে তিনি নিজের দেশ মনে করেন। কিন্তু খেলার যুদ্ধে এসে তার দলের বাইরে অন্য কিছু ভাবতে রাজি না। তাই পদ্মা ব্রিজ হয়ে এক ঘণ্টার পথ হলেও একবারও বাপ-দাবার ভিটেয় উকি দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি শুক্লা দত্ত। তিনি বলেছেন, ‘আমি দল নিয়ে ভাবছি। যখন গুরুতে আসব তখন দেখা যাবে।’
চার দলের লড়াইয়ে ভারত তিন ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছে, বাংলাদেশও তিন ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছে। বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হবে তারা নিজেদের মাঠে খেলছে। কোচ সাইফুল বারী টিটু জানিয়েছেন নিজেদের মাঠে খেললেও প্রয়োজনের সময় কতোটুকু সুবিধা নিতে পারল সেটাই প্রমাণ করতে হবে। নিজের মাঠে সারা বছর অনুশীলন হয়। মাঠ চেনানোর কোনো সুযোগ নেই। নিজেদের মাঠের সুবিধা সময়মতো কাজে লাগাতে পারলে মাঠের এডভান্টেজ নেওয়ার গুরুত্ব থাকবে।’
নেপালকে হারিয়েছে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ, দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট সেদিনই নিশ্চিত করেছিল অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার, সুরমা জান্নাত, স্বপ্না রানী, পূঁজা দাস, সাগরিকা, মুনকি আক্তার, উমেহ্লা মারমা, বন্যা খাতুন, জয়নব বিবি, সাগরিকারা। ভুটানের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচে ৯ ফুটবলারকে বসিয়ে বেঞ্চের ৯ ফুটবলারকে নামান কোচ। তাতেও বাংলাদেশ বারুদ ফুটবল খেলল। লিমা, সুলতানা, নাদিয়া, রিতু, মিতু, ঐশী, জুথী, তৃষ্ণা রানী, রুমা, কানন রানীরা বেঞ্চ থেকে উঠে এসে ৪-০ গোলে ভুটানকে হারিয়ে দিলেন। বেঞ্চের মেয়েরাও দারুণ ফুটবল খেলল।
বিশ্রামে থাকা মুল দলটি নতুন উদ্যামে আজ মাঠে নামবে। ভারত কতোটুকু শক্তিশালী তার প্রমাণ মিলবে আজ। তাদের ঘরে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ৮ জন ফুটবলার রয়েছেন বলে মঙ্গলবার নেপালকে হারিয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষে বলছিলেন। শুক্লা দত্ত বাংলাদেশকে দেখেছেন। তারা দলের সঙ্গে বিশ্লেষক এনেছে। বাংলাদেশ কোথায় দুর্বল এবং কোথায় শক্তিশালি তা নিয়ে ছক এঁকেছেন। এখন সেটি মাঠে প্রমাণ করার পালা। অন্য দিকে কোচ টিটু একটা কথা বলেছেন, ‘মেয়েরা ভেতরে শক্তি আছে। মানসিক শক্তি আছে। এখন সেটা কাজে লাগানোর অপেক্ষা।’