এম এফ রুপক
একদিকে সূর্যমুখী ফুলের বাগান আরেক দিকে সরিষার ক্ষেত। চারিদিকে হলুদে একাকার। মাঝ দিয়ে মেঠো পথ। এ যেন চোখ ধাঁধানো মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য। এই দৃশ্যের সৌন্দর্য আরেকটু বাড়িয়েছে রাস্তার দুইদিকে নারকেল গাছের সারি। এমনি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেখা মিলবে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি বিএডিসি ফার্মে।
এমন অপরুপ সৌন্দর্য অবলোকন করতে প্রতিদিনই হাজারো দর্শনার্থী আসছে আমঝুপি ফার্মে। মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে দিনের শুরু থেকেই। তবে পড়ন্ত বিকেলে এর আধিক্য বেশি লক্ষ্য করা যায়। প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে জেলার বাইরে থেকেও আসছেন অনেকেই। স্মৃতিতে গেথে রাখার জন্য সেলফিও তুলছে সবাই। এছাড়াও ছবির সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিতে সেখানে রয়েছে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারও। কিশোর কিশোরী থেকে শুরু করে বয়স্করাও আসছেন মনোরম দৃশ্যে চোখ বুলাতে।
আমঝুপির মেয়ে তৌহিদা আব্দুল্লাহ ২৭ বছর আগে গিয়েছিলেন পাকিস্তানে। দীর্ঘ সময় পর দেশে এসে বেড়াতে এসেছেন আমঝুপি ফার্মে। সাথে ছিল ছেলে আব্দুল্লা ও মেয়ে আয়েশা। অস্পষ্ট বাংলা আর উর্দূ মিশিয়ে মেয়ে আয়েশা জানালেন, পাকিস্তানে এই ধরনের সূর্যমুখীর বাগান নেই। এটা খুবই সুন্দর দৃশ্য। আমার বেশ ভালো লাগছে।
চুয়াডাঙ্গার ভালাইপুরের আব্দুর রাজ্জাক। পেশায় স্কুল শিক্ষক। দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে এসেছেন আমঝুপি ফার্মে। অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন “ সত্যিই অসাধারণ”। সামাজিক যোগযাগ মাধ্যম ফেসবুকে আমঝুপি ফার্মের এই হলুদাবরণ দেখে নিজেরও ইচ্ছে হলো দেখার। তাই চলে এলাম পরিবার নিয়ে।
গাংনীর তন্নি, রাসেল, তুহিন, আবিরও এসেছেন ফার্মে। স্মৃতিতে ধরে রাখতে ছবি তুলেছেন কয়েক’শ। তারা জানালেন এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মেহেরপুরের আর কোথাও নেই। খুবই ভালো লাগছে। সকালে এসেছি, ভাবছি থাকবো সন্ধ্যা পর্যন্ত।
মেহেরপুর শহরের লিটন সরকার ও সুমনা সরকার এসেছেন এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে। এই দৃশ্যের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমি এর আগে এতো বড় সূর্যমুখীর বাগান দেখিনি। সেই সাথে পাশের সরিষার ক্ষেত সৌন্দর্যকে দ্বিগুণ করেছে। নিজের এলাকায় এতো সুন্দর দৃশ্য না দেখে কি আর থাকা যায়। তাই চলে এলাম পরিবার নিয়ে।
এ বিষয়ে আমঝুপি বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রতি বছরই আমরা বীজ উৎপাদনের জন্য সূর্যমুখীর চাষ করে থাকি। এ বছরও ৬ বিঘা করা হয়েছে। প্রতিদিনই অনেক দর্শনার্থী আসছেন এই দৃশ্য দেখার জন্য। আমরা সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি। তবে গাছের যেন ক্ষতি না হয় সেজন্য দর্শনার্থীদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে।