বিএনপি-জামায়াতের ডাকা টানা দুই দিনের অবরোধ শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহের হরতাল ও ৭২ ঘণ্টার অবরোধের তুলনায় এবারের অবরোধের প্রথম দিন রবিবার রাজধানীতে যান চলাচল অনেকটা স্বাভাবিক রয়েছে। জনমনে কিছুটা আতঙ্ক থাকলেও জীবিকার তাগিদে কর্মস্থলে ছুটছেন মানুষ। রাজধানীর মিরপুর, গুলিস্তান, পল্টন, শাহবাগ, নতুনবাজার, গুলশান, বাংলামোটর ও কারওয়ান বাজার এলাকায় ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে রবিবার সকাল থেকে মিরপুর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল শুরু হওয়ায় জনগণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহউদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। রেলস্টেশনগুলোতে ছিলো উপচে পড়া ভীড়।
৫ নভেম্বর সকালে শনিরআখড়া, কাজলা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জীবিকার তাগিদে সকাল থেকেই ছুটছে লোকজন। উত্তরা থেকে ঢাকাগামী অফিসযাত্রীরা কিছুটা যানজটে পড়েছে। যানবাহন চলছে অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মতই। তবে অতীত অবরোধের অভিজ্ঞতায় কিছুটা আতঙ্ক কাজ করছে জনসাধারণের মধ্যে। তারা বলছেন, ককটেল বিস্ফোরণ, বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটিয়ে আতঙ্ক তৈরী করা হয়েছে বলে অনেকে ব্যক্তিগত গাড়ি বের করেনি। কিছুটা আতঙ্ক কাজ করছে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন রাকিব হাসান। তিনি বলেন,‘ কাল সন্ধ্যায় বাস পোড়ানোর কারণে একটু ভয় কাজ করছিলো। কিন্তু অফিসতো যেতে হবে। সকালে বের হয়ে দেখি অবরোধে তো সবকিছুই স্বাভাবিক। মানুষ এখন আর এসব কর্মসূচিতে সমর্থন দেবে না। অতীতে দেখেছি অবরোধে ককটেল বিস্ফোরণ, যানবাহনে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা। তাই কিছুটা আতঙ্কে আছি।’
মতিঝিল ব্যাংক পাড়ার একজন কর্মকর্তা বলেন, অবরোধ ডেকে ফেললেই হলো? মানুষ দিনের পর দিন ঘরে বসে থাকতে পারবে? গত সপ্তাহে তিনদিন কাজ করতে পারেনি, জীবন স্বাভাবিক রেখে কর্মসূচি দিলে মানুষকে পাশে পেলেও পেতে পারে, অবরোধ ডেকে পাবে না। এই যে দেখে মনে হচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি চলছে, সবকিছুই তো স্বাভাবিক এটা বিএনপির জন্য ভীলে হলো?
২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ও সেখানে সৃষ্ট সহিংসতার পরে ২৯ অক্টোবর সারা দেশে বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যার হরতাল পালিত হয়। এরপর রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঘোষণা করেন, ৩১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা অবরোধ পালন করবে বিএনপি ও এর শরিক গণতন্ত্র মঞ্চ। পরে জামায়াতও অবরোধের ডাক দেয়। সেটা শেষ হতেই ৫ও ৬ নভেম্বর আবারও অবরোধের ঘোষণা দেয় দলটি।