বিএনপি জামায়াতসহ অন্যান্য দলগুলোর ডাকা তিনদিনের অবরোধ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া অবরোধের কারণে রাজধানীর রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকলেও অফিসগামী যাত্রীরা ছিলো বিপাকে। আর সবচেয়ে বেশি দুর্দশার মুখে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। দিনের রোজগার না হলে যাদের চলে না তারা বলছেন, এই অবরোধ তাদের কথা ভেবে ডাকা হয়নি, এতে খুব বেশি সমর্থন পাবে না বিএনপি।
রিকশাচালক রুবেল মিয়া বলেন, ‘আজকে ঘরে বাজার নিয়া যাইতে পারুম না। মাইসেনের মনে আতঙ্ক, বাহিরে বাহির হইতে চায় না। ২৫০ গ্রাম কইরা প্রত্যেকটা জিনিস কিনলেও ৪০০-৫০০ টাকার লাইগা যায়। ৫০ – একশো টাকা যাই আয় হইবো সেইটা নিজেরই বাহিরে খাওনে লাইগা যাইবো। বাসায় মানুষ গুলান মুখে কি দিমু সেই চিন্তায় টিকটাছি না। আমরা তো কোন পক্ষের না, আমরা চাই সব কিছু স্বাভাবিক চলুক। পেটে ভাত জুটুক।’ পাশে বসে থাকা আরেক রিকশাচালক বলে উঠেন, ‘অবরোধে তাগো কিসু মিলবে কিনা জানি না, আমগো পেটে লাথি।’
কাকরাইল এলাকায় কথা হয় শুভদিন ইসলাম নামে এক মার্কেটিং কর্মীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে একটা ভয় ছিলো কি হয় না হয়। বের হবো কি না। কিন্তু আমার তো সেলসে কাজ কমিশনে বেতন। তাই একটু বেলা করেও হলেও বের হইছি। দেখলাম পরিস্থিতি ঠিক আছে, পুলিশ মোড়ে মোড়ে দাঁড়ানো। কিন্তু দোকানপাট তো এখনও বন্ধ।
বিজয় নগর মোড়ে বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা হৃদয় বলেন, ‘যেমনটা ভাবছিলাম, তেমন কিছুই দেখছি না। তবে রাস্তায় গাড়ি কম। এমনিতেই তো ঢাকায় গাড়ি পাওয়া কষ্টের। আর গাড়ি না থাকায় কষ্টটা আরও বেড়েছে। আধাঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। কিছুক্ষণ হেটে আসলা। একটা সমাধানে আসা উচিত মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, এরকম করে তো আমাদের ভোগান্তি, একটা ভয় নিয়ে চলাচল করা লাগে। বাসা বাহিরে বের হলে বাসার লোকেরা চিন্তায় থাকে। এইসব কিছুর সমাধান হওয়া উচিত। রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য আমরা কেন বিপদে পড়বো।
তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি শুরু হলেও সকাল সকাল মাঠে নামেনি বিএনপি। সকাল থেকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখা যায়নি। কাকরাইল, নাইটিঙ্গেল, ফকিরাপুল কিংবা বিজয়নগরেও বিএনপি নেতাকর্মীদের কাউকে অবস্থান নিতে দেখা যায়নি। এদিকে, বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের নাশকতা ঠেকাতে রাজধানীর গুলিস্তানে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
অবস্থান নেওয়া নেতাকর্মীরা জানান, বিএনপি নাশকতার নামে নির্বাচন বানচাল করতে চায়। জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে চায়। তারা দেশকে একটি অস্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যেতে চায়। আমরা তাদের এই সহিংসতার বিরুদ্ধে, জনগণের জানমাল রক্ষায় শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। সতর্ক পাহারায় আছি।