করোনার সংক্রমণ রোধে ৫০ শতাংশ জনবল দিয়ে অফিস করার নির্দেশনা দেওয়া হলেও এখনো তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। অনেক অফিস এখনো পুরো জনবল দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বুধবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, হঠাৎ করে নির্দেশনা হওয়ায় কেউ কেউ হয়তো নির্দেশনার ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে পেরেছে। তবে জরুরি কাজে নিয়োজিত ছাড়া বাকিরা দু–এক দিনের মধ্যে তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ইতোমধ্যে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এর আগে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার নতুন করে ১৮ দফা নির্দেশনা দেয়। সরকারের দেওয়া ১৮ দফা নির্দেশনা হলো-
১. সব ধরনের জনসমাগম (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) সীমিত করতে হবে। উচ্চ সংক্রমণযুক্ত এলাকায় সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হলো। বিয়ে/জন্মদিনসহ যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে।
২. মসজিদসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।
৩. পর্যটন/বিনোদন কেন্দ্র সিনেমা হল/থিয়েটার হলে জনসমাগম সীমিত করতে হবে এবং সব ধরনের মেলা আয়োজন নিরুৎসাহিত করতে হবে।
৪. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের অধিক যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।
৫. সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতে আন্তঃজেলা যান চলাচল সীমিত করতে হবে, প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে।
৬. বিদেশ হতে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক (হোটেলে নিজ খরচে) কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।
৭. নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী খোলা/উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনপূর্বক ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে; ওষুধের দোকানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।
৮. স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহ মাস্ক পরিধানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।
৯. শপিং মলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।
১০. সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাদ্রাসা, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
১১. অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা/আড্ডা বন্ধ করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ১০টার পর বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
১২. প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাক্ক পরিধানসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। মাস্ক পরিধান না করলে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১৩. করোনায় আক্রান্ত/করোনার লক্ষণযুক্ত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যদেরও কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।
১৪. জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান, শিল্প কারখানাসমূহ ৫০ ভাগ জনবল দ্বারা পরিচালনা করতে হবে। গর্ভবতী/ অসুস্থ/বয়স ৫৫ বছরের ঊর্ধ্বে কর্মকর্তা/কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১৫. সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা যথাসম্ভব অনলাইনে আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে।
১৬. সশরীরে উপস্থিত হতে হয় এমন যে কোনো ধরনের গণপরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।
১৭. হোটেল-রেস্তোরাসমূহে ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের অধিক মানুষের প্রবেশ বারিত করতে হবে।
১৮. কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন সর্বদা বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।