সাতদিন ধরে হার্টের চিকিৎসা নিয়ে সন্ধ্যায় হাসপাতাল ছেড়েছেন রোগী। রাতে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে সকালে আবার নিয়ে আসা হয় একই হাসপাতালে। কিন্তু দুই ঘণ্টা যাবৎ তারা রোগীকে ভর্তি নেয়নি। এক পর্যায়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগেই তার মৃত্যু হয়। তিনি হার্টের রোগী ছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর পার্ক ভিউ হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটেছে। এর আগেও তারা এই রোগীকে ভর্তি নেয়নি প্রথমে। পরবর্তীতে এক সাবেক ছাত্রনেতার হস্তক্ষেপে রোগী ভর্তি নেয় কর্তৃপক্ষ।
বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ হোসেন। তিনি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার শিকলবাহা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।
মোহাম্মদ হোসেনের ভাতিজা ইসহাক ইমন বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যায় আমার চাচাকে পার্কভিউ হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে যাই। রাতে ওনার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে আজ সকাল ৭ টার দিকে আবার পার্কভিউ হাসপাতালে নিয়ে আসি। কিন্তু এবার তারা রোগী ভর্তি নেয়নি। দুই ঘণ্টা ধরে তারা রোগীকে দেখতেও আসেনি। এক পর্যায়ে ডাক্তার আশরাফ এসে বলে উনি করোনা সাসপেক্টেড। আইসিইউ লাগবে। এরপর বলে একবার ৪ তলায় যান, আবার বলে ৮ তলায় যান। এভাবে করতে করতে রোগী মারাই গেল।’
তিনি আরও বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগেও তারা আমার চাচাকে ভর্তি নেয়নি। পরে নুরুল আজিম রনি ভাইয়ের হস্তক্ষেপে তারা ভর্তি নেয়।’
এ বিষয়ে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি বলেন, ‘১৫ জুন বুকের ব্যথা নিয়ে এই রোগী উক্ত হাসপাতালে আসলে সিট না দেওয়ার অভিযোগ এনে রোগীর স্বজন আমাকে ফোন করেছিল। সেদিন আমি হাসপাতালের দায়িত্বরতদের সাথে ফোনে কথা বলে একপ্রকার জোর করে রোগীর সিট ম্যানেজ করে দিয়েছিলাম। এরপর এই রোগী সুস্থ হলে ২০ জুন বাড়ি চলে যায়। পরবর্তীতে ২৬ জুন পুনরায় অসুস্থ হলে এই রোগীকে আবারো পার্ক ভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার সন্ধ্যায় রোগীকে রিলিজ করলে আত্মীয়রা বাড়ি নিয়ে যায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভোরে পুনরায় এই রোগী বুকের ব্যথা অনুভব করলে পার্কভিউ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সকাল ৭টা থেকে দুই ঘণ্টা উক্ত রোগীকে ইমার্জেন্সিতে রাখলেও হার্টের কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। উল্টো বুধবার সন্ধ্যায় রিলিজ হওয়া এই হার্টের রোগীকে করোনা উপসর্গের রোগী বলে হাসপাতালের দায়িত্বরতরা চিকিৎসাদানে বিরত থাকেন। পরবর্তীতে বুকের ব্যথায় কাতর এই রোগী বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেন।’
এ বিষয়ে জানতে সিএমপির উপ কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক বলেন, ‘আমরা এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। স্বজনরা অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নিব।’
পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. রেজাউল করিমকে মুঠোফোনে কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।
সূত্র: বিডি-প্রতিদিন