“গাধা” আমাদের সমাজে একটি প্রচলিত শব্দ। জীবনে একবার হলেও এই শব্দটি শোনেনি এমন মানুষ হয়তো পাওয়া যাবেনা। কারণ, ভুল হওয়াটা মানুষের জীবনে একটি সহজ ব্যাপার। মানুষের ভুল হবেই তাই, কেউ ভুল করলে বা কোনো বোকামি করলে ‘গাধার সঙ্গে তুলনা’ করা হয় হারহামেশাই। আবার গাধা নিয়ে অনেক রুপক কথাও শোনা যায়। যেমন “গাধা সবই করতে পারে, শুধু ভাতের লাকড়ি বইতে পারেনা”। এখন প্রশ্ন আসতেই পারে, গাধা কি আসলেই বোকা? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানা নেই। যাইহোক গাধা বোকা হোক বা চালাক হোক, আজ কেউ গাধা বললে রাগ করবেন না। কারণ আজ ৮ মে গাধা দিবস।
গাধা শুধু ভারই বহন করে না, এই প্রাণীটি ওষুধ শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল উৎপাদকও। গাধার চামড়ার মধ্যে থাকা বিশেষ ধরনের আঠা জিলাটিন চীনে ইজিয়াও নামের প্রচলিত ওষুধের প্রধান কাঁচামাল। এ ওষুধ অ্যাজমা থেকে ইনসোমনিয়ার মতো নানা রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। তাই প্রাণীটিকে শুধু অবহেলাই করবেন না, অবজ্ঞা করবেন না ভালোও বাসবেন।
গাধার রয়েছে অবিশ্বাস্য স্মৃতিশক্তি। ২৫ বছর আগে দেখা এলাকা, এমনকি বহু বছর আগে দেখা গাধাদের তারা সহজেই চিনতে পারে। পাশাপাশি, গাধা প্রচণ্ড জেদি, আত্মরক্ষা করার প্রবল ক্ষমতা রাখে। গাধাকে ভয় দেখিয়ে বা জোর করে কোনো কাজ করিয়ে নেয়া খুব কঠিন ব্যাপার।
কোনো ঘটনায় গাধা সহজে চমকে ওঠে না। এরা প্রখর কৌতূহলী। গাধার চিন্তাধারা ঘোড়ার থেকে স্বাধীন। একটি গাধা মরু পরিবেশে ৬০ মাইল দূরে থেকে অন্য গাধার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারে। ঘোড়ার থেকে তাদের আছে অনেক বড় কান, যা তাদের শরীর শীতল রাখে।
বিশ্ব গাধা দিবসের প্রচলন করেছিলেন আর্ক রাজিক। তিনি একজন বিজ্ঞানী এবং মরুভূমির প্রাণী নিয়ে কাজ করেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন গাধারা মানুষের জন্য যে পরিমাণ কাজ করে, সেই পরিমাণ স্বীকৃতি পাচ্ছে না। এ জন্য তিনি একটি ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করেন। তারপর সেখানে গাধা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য প্রচার করতে শুরু করেন।
আর্ক রাজিকের প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালে প্রথম বিশ্ব গাধা দিবস উদযাপন করা হয়। তখন থেকে প্রতি বছর ৮ মে গাধা দিবস উদযাপিত হচ্ছে। দিবসটি উদযাপনের উদ্দেশ্য হলো গাধাকে নিয়ে তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া এবং প্রাণীটি কীভাবে মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলছে তা তুলে ধরা।