আদালতের কাঠগড়ায় নিজেকে করোনা রোগী দাবি করেছেন রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ করিম ওরফে রিজেন্ট সাহেদ। তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি নিজেও করোনা রোগী। আমার বাবা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। একমাত্র আমিই বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসা সেবা দেই। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তোলা হলে রিমান্ড শুনানির মাঝখানে বিচারককে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন সকালে পুলিশ মো. সাহেদ ও রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনার পরিচালক মাসুদ পারভেজকে মুখ্য মহানগর হাকিমের উপস্থাপন করে রিমান্ডের আবেদন করে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তাকে জিজ্ঞেস করেন তার কিছু বলার আছে কিনা। তখন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাহেদ নিজেকে করোনা রোগী দাবি করে এসব কথা বলেন।
এর আগে মো. সাহেদ ও মাসুদ পারভেজকে হাতকড়া পরিয়ে ও কোমরে দড়ি দিয়ে বেধে সকালে আদালতে নেয়া হয়। এ সময় তাদের মাথায় হেলমেট ও গায়ে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ছিল।
এরপর উত্তরা পশ্চিম থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা এসএম গাফফারুল আলম রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ও এমডি মাসুদ পারভেজকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই মামলার আরেক আসামি তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলীকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আবার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন একই তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে বিচারক সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বুধবার ভোরে রিজেন্ট সাহেদকে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা সাতক্ষীরা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে আটক করে র্যাব। র্যাবের দাবি, তিনি নৌকাযোগে নদী পার হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন।
নৌকায় ওঠার ঠিক আগ মূহুর্তে নদীর পাড় থেকেই তাকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছেন র্যাব কর্মকর্তা তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার।
গ্রেফতারের পর তাকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় ও ঢাকার উত্তরায় তাকে নিয়ে একটি অভিযান চালায় র্যাব।
পরে ব্রিফিংয়ে র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ঢাকায় অভিযান চালিয়ে মো. সাহেদের একটি অফিস থেকে তারা জাল টাকা উদ্ধার করেছেন।
বুধবার বিকালেই ঢাকা মেডিকেল কলেজে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাকে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র্যাব।
টেস্ট না করেই করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে গত ৭ জুলাই সিলগালা করে দেয়া হয়েছে ঢাকার উত্তরায় রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়।
সে সময় থেকেই প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. সাহেদ পলাতক ছিলেন।
রিজেন্ট হাসপাতাল ও গ্রুপের মালিক ও এমডিসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। প্রতারণার মামলায় এর আগে আরও ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।
সূত্র- যুগান্তর