আজ ১৩ ডিসেম্বর, সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সির জন্মদিন। ১৯৮৭ সালের আজকের এ দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। জন্মদিন উপলক্ষে শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে নিজ বাসায় প্রথম কেক কাটেন তিনি। সঙ্গে ছিল তার দুই কন্যা।
এই কেক কাটার ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে লম্বা স্ট্যাটাস দিয়েছেন ন্যান্সি। এতে তিনি তার বয়স নিয়ে বলেছেন। তিনি বলেন, ’আমার বয়স ৩২ এর বদলে দাঁড়ালো ২৩ এর ঘরে। কিন্তু তিনি এ কথা কেন বলেছেন? তার লম্বা স্ট্যাটাসেই সেই উত্তর আছে।
ন্যান্সির পুরো স্ট্যাটাসটি নিচে তুলে ধরা হলো-
চলতি বছরের মার্চ মাসের শুরুতে কিছু পুরোনো জনপ্রিয় গান পুনরায় রেকর্ড করার বিষয়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান অনুপম মিউজিকের কর্ণধার আনোয়ার ভাইয়ের সাথে আমার প্রথম পরিচয়। ভদ্রলোক সদা হাস্যোজ্জ্বল এবং ভীষণ রকমের প্রাণখোলা মানুষ। উনার মিশুক স্বভাব, সেইসাথে কাজের সূত্রে আমার সাথে উনার একটা সখ্যতা তৈরি হয়।
একদিন আলাপ করতে করতে উনি বলে বসলেন, আপনার মেয়ে রোদেলা তো মাশাআল্লাহ বেশ বড় হয়ে গেছে। আপনার হাতে সময় আছে মাত্র দু বছর, এর মধ্যে যা ভালো ভালো কাজ করার করে নিন। আমি বললাম, দু বছর সময় আছে মানে? আনোয়ার ভাই বললেন, দু বছর পরে আপনার গানের চাইতে রোদেলার গানই মানুষ বেশি শুনতে চাইবে। আমি কিন্তু মনে মনে বেশ খুশিই হলাম। সন্তানের উত্থান কোন বাবা মায়ের ভালো না লাগে!
এরপর থেকে আনোয়ার ভাইয়ের সাথে কথা হলেই উনি কথা প্রসঙ্গে বলেন, আপা আপনার হাতে সময় কিন্তু মাত্র দু বছর। বরাবরের মতো আমি শুনে হাসি।
বয়স বাড়ছে তা নিয়ে আমি কখনোই চিন্তিত ছিলাম না। সময়ের সাথে বয়স বাড়বে সেটাই তো প্রকৃতির নিয়ম। কাকতালীয় ব্যাপার হচ্ছে, হঠাৎ করে আমি খেয়াল করলাম রোদেলার জন্য বেশিরভাগ মানুষ আমায় আন্টি ডাকে। আমি কৌতূহলবশত আনোয়ার ভাইয়ের কাছে জানতে চাইলাম, আপনি কি দু বছর সময়ের কথা বললেন, আমার বয়স বেড়ে যাচ্ছে বলে? উনি বললেন, সেটাও একটা কারণ! এই প্রথম আমি বয়স বেড়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত হলাম।
আনোয়ার ভাইয়ের ব্যাপারে আরেকটি কথা বলা হয়নি। সেটা হলো পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষটি এখনও নিজেকে মানসিক ও শারীরিকভাবে চল্লিশের ঘরে আটকে রেখেছেন! আমি নিজেই নিজেকে বোঝালাম, আনোয়ার ভাইয়ের মতো শারীরিকভাবে না হলেও মানসিক দিক দিয়ে আমি এখনও নিজেকে তরুণীই মনে করি। তাই ভাবলাম এ বছর বয়সের সংখ্যাটাকে ওলোটপালোট করে দেই। তাতে করে আমার বয়স বত্রিশের বদলে দাঁড়ালো তেইশের ঘরে।
এদিকে আমার প্ল্যান অগ্রিম জানতে পেরে আমার বন্ধু আমাকে সতর্ক করে দিয়ে বলল, এ বছর সংখ্যা আগ-পিছ করেছো কিন্ত সামনের বছর থেকে আর এমন টা করতে যেও না। আমি না বুঝেই খানিকটা মন খারাপ করলাম। বেচারা বুঝতে পেরে আমায় কাগজে কলমে সরল অংকটা করে দেখিয়ে দিল।
৩৩-৩৩ সামনের বছর সংখ্যা উল্টে দিলেও ফলাফল একই থাকছে অর্থাৎ বয়স না কমলেও অন্তত বাড়ছে না। বিপত্তি ঘটছে পরের বছর থেকে। ৩৪-৪৩, ৩৫-৫৩, ৩৬-৬৩, ৩৭-৭৩, ৩৮-৮৩, ৩৯-৯৩… মানে হলো সংখ্যা উল্টালে প্রতি বছর আমার ১০ বছর করে বয়স বাড়বে! কি ভয়ংকর! আবার বয়স চল্লিশ হলে সেটা উল্টে দিলে বয়স হবে চার..! বিষয়টা বাড়াবাড়ি হয়ে যায়।
তাই ঠিক করলাম, যদি আগামী আট বছর বেঁচে থাকি তাহলে আমার বয়স ২৩ এর ঘরে ফিক্সড করলাম, বাড়াবোও না কমাবোও না। এক দেশ, এক জবান।
বি : দ্র :- চল্লিশের পরে বয়স কততে আটকাবো সেটা নিয়ে আপাতত ভাবছি না, পরেরটা পরে দেখা যাবে।