বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচিতে ২১টি বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এদিকে রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে আগুন সন্ত্রাস দেখতে চায় না দেশের মানুষ। এব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
ঢাকার তিনটি প্রধান পয়েন্ট ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার ও গুলিস্তান এলাকায় গাড়ি পোড়ানোর পরপরই বিভিন্ন পেশাজীবীর সাথে কথা বলে তীব্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। বাংলা মোটরে গাড়ি পোড়ানোর একঘন্টা পরে ওই এলাকায় কথা হয় হারুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, চোখের সামনে গাড়ি থেকে লোক নামায়ে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। এরকম দেখতে চাই না।
বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘অর্থনীতি এবং মানুষকে জিম্মি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার অধিকার কারও নেই। এটা বুঝতে পারলে ভালো। রাজনীতিতে অধিকার আদায়ের আন্দোলনের বিকল্প খুঁজতে হবে। আমরা যারা চাকরি করি তাদের জন্য হরতাল অবরোধ খুব শঙ্কার। একটা গোষ্ঠী ক্ষমতায় থাকবে, আরেকটা বিরোধী অবস্থানে থাকবে এটা মেনে দেশের জন্য কাজ করবে।’
সোমবার (৬ নভেম্বর) ছিল অবরোধের দ্বিতীয় দিন। এরপরপরই সন্ধ্যায় বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৮ ও ৯ নভেম্বর নতুন করে অবরোধ ডাকা হয়েছে। একের পর এর অবরধে অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে।
এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে অর্থনীতিতে ভয়ানক বিপদ ডেকে আনবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক দাবি-দাওয়ার অংশ হিসেবে হরতাল, অবরোধ জ্বালাও-পোড়াও, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, যান চলাচল ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং ভাঙচুরের ঘটনার প্রভাব ব্যবসায়ী ও সাধারণের আয় রোজগারের ওপর সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। হরতাল অবরোধে বহুমুখী ক্ষতির সম্মুখীন হয় দেশ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, হরতাল অবরোধ এভাবে চলতে থাকলে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যিক পণ্যের আনা-নেওয়া এবং আমদানি-রফতানি প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগ করবেন না। তারা হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন। রাজনৈতিক এই অস্থিরতার সুযোগে অনেকেই টাকা পাচার করবেন। তাতে ডলার সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করবে। এর নেতিবাচক প্রভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে যাবে।