আলমডাঙ্গা পৌরসভার কোর্টপাড়ার বাসিন্দা মৃত মনোয়ারা খাতুন গংয়েরা দীর্ঘ ২৭ বছর পর আবারো আদালতের রায়ে নিজ বসতবাড়ি ফিরে পেয়েছে।
১৯৯৭ সালে শুরু হওয়া আলমডাঙ্গা পৌরসভার কোর্টপাড়ার একটি দেওয়ানী মামলা ২০২৩ সালে নিষ্পত্তির পর গতকাল শুক্রবার সকালে চুয়াডাঙ্গা আদালতের নির্দেশে আদালতে নিযুক্ত প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে বিবাদীপক্ষকে ৪.৫০ শতক জমির দখল বুঝিয়ে দিয়েছেন।
পূণরায় আবারো পৈত্রিক ভিটে বাড়ি ফিরে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নাজির শেখ ও তার ভাই আশাবুল হক লালু শেখ। ওই জমি কেন্দ্রিক দুশ্চিন্তায় তার বাবাকেও হারিয়েছেন বলে তারা জানান।
জানাগেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী গ্রামের মৃত আমেনা খাতুনের সাথে দীর্ঘদিন পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। ওই সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় কয়েক দফা সালিশ-বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। আমেনা খাতুন গংয়েরা প্রভাবশালী হওয়ায় তৎকালীন সময়ে জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টা চালায়। তবুও বসতবাড়ি না ছাড়তে কঠোর অবস্থান নেয় মনোয়ারা খাতুন গংয়েরা।
১৯৯৭ সালে আমেনা খাতুন বাদি হয়ে চুয়াডাঙ্গা জুডিশিয়াল আমলী আদালতে জমিসংক্রান্ত দেওয়ানী মামলা করেন। ওই মামলায় ২০০৬ সালের অক্টোবরে কোর্টপাড়ার তৎকালীন বাসিন্দা মনোয়ারা খাতুন গংয়ের বসতবাড়ি উচ্ছেদের নির্দেশ দেন আদালত। তারপরই আদালতের নির্দেশে বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দেয় বাদী পক্ষ। স্থায়ী বসতবাড়ি থেকে বের হতে হয় মনোয়ারা খাতুন গংদের। বিগত ২৭ বছর যাবৎ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে তারা ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছে।
উচ্ছেদ পূর্বক মনোয়ারা খাতুন বাদি হয়ে ২০০৭ সালের ২২ জুলাই হাইকোর্টে পূণরায় আপিল করেন। চলতে থাকে দীর্ঘ মামলার সাক্ষ্য গ্রহন। দীর্ঘদিন মামলা চলার পর ২০১৮ সালের ৮ জুলাই হাইকোর্ট মনোয়ারা খাতুনের পক্ষে ডিক্রি প্রদান করেন। হাইকোর্ট চুয়াডাঙ্গা জুডিশিয়াল আমলী আদালতের মাধ্যমে ডিক্রি প্রাপ্ত মালিককে জমি বুঝিয়ে দেবার নির্দেশ দেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার সকালে চুয়াডাঙ্গা আদালতের ৬ সদস্য প্রতিনিধি দল কোর্টপাড়ায় উপস্থিত হয়ে মনোয়ারা খাতুন গংদের জমি বুঝিয়ে দেয়। তারা দীর্ঘদিন পর জমি ফিরে পাওয়ায় আনন্দে ঢোল-ঢাক বাজিয়ে নিজ বসতবাড়ির জমি বুঝিয়ে নেয়।