কে হবেন আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের অভিভাবক এ নিয়ে চলছে গ্রামে গ্রামে জল্পনা কল্পনা। এবার বিরোধীদলের কোন প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগের ৫ জন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বির মধ্যে ভোট ভাগাভাগি হবে এটা অনেকটা নিশ্চিত। তবে ৫ প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডির। এছাড়া ভাগ হয়ে গেছে নিজেদের কর্মী বাহিনী। এর পরেও চার খণ্ডে বিভক্ত হয়ে ভোটের মাঠে প্রার্থীরা। তাদের কর্মী সমর্থকদের নিজের পক্ষে আনতে মরিয়া হয়ে উঠছেন। এদিকে মোমিন চৌধুরী ডাবু (আনারস) প্রতিকে তাঁর কর্মী সমর্থকদের নিয়ে একাই উপজেলার প্রত্যান্তঞ্চলে গিয়ে ভোট চেয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখানে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে পঞ্চমুখী। নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসলেও এখনও জমে ওঠেনি নির্বাচনী মাঠ।
আগামী ১৯ মে প্রচারণার শেষ দিন। তবে প্রতিদিন প্রার্থীরা উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ চালিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন।
এবারও নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে প্রচারণা করছেন আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন (দোয়াতকলম)। এছাড়া নতুন মূখ হিসেবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সাবেক হারদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম (কাপ পিরিচ)। একই এলাকার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মঞ্জিলুর রহমান (মোটরসাইকেল) , ঢাকার দারুসসালাম থানা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোমিন চৌধুরী ডাবু (আনারস)। ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হয়ে এবারও বিজয়ের লক্ষ্য নিয়ে সাবেক জেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক জিল্লুর রহমান (ঘোড়া) প্রতিক নিয়ে আবারো ভোটের মাঠে।
এদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগের পদ না থাকলেও উপজেলা আওয়ামীলীগ ও ১০ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ঐক্যবদ্ধ ভাবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মঞ্জিলুর রহমানকে সমর্থন দিয়ে মাঠে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিত ইতিমধ্যে সাবেক জেলা যুবলীগের যুগ্ন-আহবায়ক জিল্লুর রহমানকে সমর্থন দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। তিনি গত সংসদ নির্বাচনে (ঈগল) প্রতিকে নির্বাচন করেন।
বর্তমান সংসদ সদস্যের নিকট পরাজিত হওয়ায় এ আসনে তাঁর আধিপত্যবিস্তারের জন্যই জিল্লুর রহমানকে সরাসরি সমর্থন করেছেন বলে প্রবিন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ মনে করেন। তবে দীর্ঘদিন রাজনৈতিক অঙ্গনে সুপরিচিত মুখ বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী নুরুল ইসলাম। ইতিপূর্বে তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষকলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্বপালন করেন। তাঁরপর তিনি জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য লাভের পর দু’বার হারদি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী হন। তাঁর দায়িত্বপালনের ১০ বছরে ইউনিয়নকে একটি মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তাঁর দায়িত্ববোধ থেকে আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তাঁর সাথে সখ্যতা রেখে উপজেলা যুবলীগের নেতা-কর্মীরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়া গত ৫ বছর উপজেলা নির্বাচনে দায়িত্বপালন শেষে আবারো নির্বাচনের মাঠে ভোটযুদ্ধে সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আয়ুব হোসেন। এবার পারিবারিক সঙ্গ না পেলেও জেলা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি। তাঁর দায়িত্বপালনে কর্মীদের নানা মুখি প্রতিশ্রুতি পুরণ না করায় ভোটারদের নিকট থেকে ফিরছেন খালি হাতে।
তিনি ছাড়াও ঢাকা উত্তর দারুসসালাম থানা আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন মোমিন চৌধুরী ডাবু। উপজেলা রাজনৈতিক অঙ্গনে অপরিচিত থাকলেও ঢাকাতে রয়েছে শক্তিশালী অবস্থান। এর পাশাপাশি উপজেলার অনেক নেতা-কর্মীরা মামলা হামলা থেকে রেহাই পেতে তার দারস্থ হন। বিভিন্ন সংগঠন পক্ষপাতিত্ব করলেও ডাবু তাঁর নিজের কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে পৌঁছে গেছেন প্রত্যান্তঞ্চলে। শহর কেন্দ্রিক রাজনৈতিক মাঠে তাঁর নাম জানা না থাকলেও গ্রামাঞ্চলে সাড়া জাগিয়ে ভোটে জয়লাভে দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি।