দিনভর অনশন শেষে রাতে বিয়ে হলো ওয়াসিম-শিউলির। গতকাল রবিবার রাত ৮টার দিকে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের উপস্থিতিতে এ বিয়েল কার্যক্রম শেষ হয়।
মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আনারুল ইসলাম বিয়ষটি নিশ্চিত করে মেহেরপুর প্রতিদিনকে জানান, রবিবার ভোর রাত থেকে দীর্ঘদিনে প্রেমিক ওয়াসিমের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনড় ছিল শিউলি। অবশেষে দুই পরিবারের মধ্যে আপোস মিমাংসার মাধ্যমে ১ লাখ টাকা দেনমহরে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, ওয়াসিম ও শিউলি খাতুন একে অপরের প্রতিবেশি। রবিবার ভোর রাত থেকে আনন্দবাস বিশ্বিস পাড়ার আবুল হোসেনের ছেলে ওয়াসিমের বাড়ির সামনে বসে বিয়ের দাবি নিয়ে অনশন করছিল একই গ্রামের ইনু বিশ্বাসের মেয়ে শিউলি খাতুন। প্রথম দিকে শিউলি ওয়াসিম গা ঢাকা দিলেও পরে বিয়েল জন্য রাজি হয়।
এ বিষয়ে শিউলি খাতুন জানান, দির্ঘ ৭ বছর যাবত ওয়াসিম ও আমি একে অপরকে ভালোবেসে আসছি। আমি ওয়াসিমকে বার বার বিয়ের কথা বললে ওয়াসিম বিভিন্ তালবাহানা করে সময় দাবি করে। এভাবে অপেক্ষা করতে করতে চলে যায় ৭ টি বছর। পরে যখন আমি বুঝতে পারি সে আমাকে বিয়ে না করে অন্য যায়গায় মেয়ে দেখছে তখন আমি তার ডাকে আজ ভোর রাতে তার বাসাতে যায়। তার বাসাতে যাওয়ার পর তার পরিবারের লোকজনের কথা শুনে আমাকে বিয়ে করতে নারাজ হয়। পরে আমার মোবইল নিয়ে আমাদের ৭ বছর চলাকালীন রিলেশনের যত ছবি, কথার রেকোর্ড ছিলো সেগুলো সব ডিলিট করে দেয়। এবং আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে বলে এখন বাসায় যা পরে ভেবেচিন্তে দেখবো কি করা যায়।
আমার এই মুখ নিয়ে আমি আর বাসায় যেতে না পেরে তার বাড়ির সামনে বসে অনশন করতে থাকি। আমি যখন তার বাড়িতে চলে এসেছি, তাকে বিয়ে না করা পর্যন্ত বাড়ি ফিরবো না।
এদিকে মেয়ের কথার ভিন্ন মত পোষন করে ছেলের মা জানান,আমার ছেলে ঢাকাতে চাকরি করে। সে আজ ৩ দিন আগে বাসায় এসেছে। আমার ছেলে তাকে ডাকেনি। সে নিজেই আজ সকালে বাসায় এসে আমার ছেলেকে বিয়ে করবে বলে দাবি করে। শেষ পর্যন্ত উপায় না পেয়ে মান সম্মানের কথা ভেবে বিয়ে দিতে রাজি হই।
এ ঘটনার বিষয়ে ওয়াসিমের কাছে জানতে চাওয়া হলে সম্পর্কের কথা অস্বিকার করে তিনি বলেন, আমি তার সাথে দির্ঘদিন ধরে কথা বলি এটা সত্য কথা। কিন্তু তার সাথে আমার প্রেমের কোন সম্পর্ক ছিল না। তাছাড়া তাকে আমি ফোন করে আমার বাসায় আসতেও বলিনি। সকালে আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, ঘুমন্ত অবস্থায় সকালে সে আমার ঘরে এসে আমাকে ডাকাডাকি শুরু করে। ঘুম থেকে উঠতেই সে আমাকে বলে বিয়ের কথা। কিন্তু আমি তাকে বিয়ে করতে না চাইলে সে বলে বিয়ে না করলে আমার বাড়ি থেকে সে যাবে না। এসব বিষয়ে ঝামেলা শুরু হলে আমি বাড়ি থেকে চলে আসি। পরে যখন আমার পরিবার বিয়েল সিদ্ধান্ত নেয় তখন বাড়ি ফিরে আসি। তবে এখন শিউলি তার নিজ বাড়িতেই থাকবে পরবর্তিতে তাকে নিয়ে আসা হবে।
রেজাউল হক / শাকিল রেজা, মুজিবনগর