শীত আসবে সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন আসবে জীবনযাত্রার এটা খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। তাই জীবনযাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কিছু অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক পরিবর্তনও থাকে। যেমন শীতে শীতবস্ত্র পরিধান থেকে শুরু করে বিছানায় কম্বল, লেপ, ভারি চাদর নানান ধরনের জিনিস ব্যবহার করা সেটা অন্যতম একটি বিষয়।
পুরোদমে এখন শীতের হাওয়া বইছে চারিদিকে। বিশ্বের প্রতিটা জায়গায় এই সময় প্রচণ্ড পরিমাণে শীত পড়ে থাকে। তাই এই সময়ে দরকার ঘরের বাড়তি উষ্ণতা। তীব্র শীতে কাবু প্রায় সবাই। তবে উষ্ণতা পেতে হলে গৃহে বেশ কিছু পরিবর্তন দরকার। তাই সে পরিবর্তনগুলো কি কি হতে পারে খুব সহজ উপায়ে ঘরের পরিবর্তন করা যায়।
পর্যাপ্ত রোদ
যখন সূর্য ওঠে তখন যাতে ঘরে সূর্যের আলো প্রবেশ করে এরূপ ব্যবস্থা রাখতে হবে শীতকালে সাধারণত সকাল দশটার পরে সূর্যের দেখা পাওয়া যায় তাই জানালা দিয়ে যেন ঘরের সূর্যের আলো বা তা প্রবেশ করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এই সময় ঘরের পর্দা গুলো জানালা থেকে সরিয়ে দিতে হবে।
দেয়ালের সজ্জা
দেয়ালে ওয়াল বোর্ড কিংবা ফ্রেম অথবা শতরঞ্জি ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে দেয়াল দিয়ে বাতাস প্রবেশ করবে না সহজে। কারণ শীতকালে খুব দ্রুত দেয়াল দিয়ে বাতাস প্রবেশ করে। এছাড়াও কাঠের ফ্রেমে বাঁধানো কোন ছবি কিংবা কোন বড় সাইজের আয়না ঝুলিয়ে দিন। যা বাতাস প্রবেশ আটকাবে।
পর্দার ব্যবহার
শীতকালের পর্দাগুলো যেন সাধারণ সময়ের পর্দার থেকে ভারি হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং পর্দার রং গুলো যাতে বেশ গাঢ় এবং উজ্জ্বল হয়। কমলা, লাল , সবুজ, নীল, বেগুনি এইসব রঙের পর্দা লাগালে ঘরকে বেশ ভারী ভারী মনে হবে এবং উষ্ণতাও দেবে। ভারী পর্দা বাহিরে বাতাস প্রবেশ যাতে না করে সেদিকে সাহায্য করবে।
ঘরের মেঝের উষ্ণতা
ঘরের মেঝেতে ভারি এবং বড় সাইজের কার্পেট কিংবা ভারী শতরঞ্জি বিছিয়ে রাখতে পারেন ঘরে সৌন্দর্য শোভা পাবেই পাশাপাশি সিট থেকেও রক্ষা পাওয়া যাবে।
বাড়তি তাপ
সন্ধ্যার পরে ঘরে একটি সুন্দর মোমবাতি এবং আগরবাতি ধরিয়ে দিতে পারেন এতে করে ঘরে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি ঘরকে উষ্ণ রাখবে। এখন অনেক সুগন্ধযুক্ত মোমবাতি কিনতে পাওয়া যায় এতে করে ঘরের উষ্ণতার সাথে ঘরের স্নিগ্ধতাও বজায় থাকে। অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল হল তাপ রক্ষার পরিবাহক। এছাড়াও অ্যালুমিনিয়াম ফায়েল শীতের উষ্ণতায় অন্যতম কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। শীতকালে রান্নাঘরে চুলার আশেপাশে ফয়েল পেপার লাগিয়ে দিন।
আলো ও তাপ
শীতকালে ঘরে একটু হলুদ রঙের আলো ব্যবহার করার চেষ্টা করুন ঘর অনেকটা সময় উষ্ণ থাকবে। এছাড়াও ঘুমানোর আগে মাটি কিংবা স্টিলের পাত্রে গরম জল করে ঘরের একপাশে রেখে দিন সেই গরম জল থেকে ওঠা তাপ ঘরকে উষ্ণ করবে।
বিছানায় পরিবর্তন
প্রতিটা মানুষের জীবনের সবচেয়ে শান্তির জায়গা হচ্ছে বিছানা। সেটা কর্মব্যস্ত মানুষ থেকে শুরু করে ঘরের গৃহিণী পর্যন্ত সবাই দিনশেষে আরাম করে এই জায়গাতে। এই বিছানায় যদি শীতকালে বড্ড আরাম না দেয় তাহলে সেটা কখনোই শান্তি হবে না তাই এই সময় বিছানায় একটু ভারী এবং গাঢ় রঙের চাদর বিছানো উচিত। এছাড়াও বিছানার কর্নারে ভারী চাদর বা সাল বিছিয়ে রাখা উচিত। কয়েকটি অতিরিক্ত বালিশ দিয়ে বিছানাটি সাজাতে পারেন। এ ছাড়া রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটি গরম পানির মতন বিছানায় রাখতে পারেন সবচেয়ে বেশি উষ্ণতা পাওয়া যাবে।
ঘরের আসবাবের সজ্জা
ঘরের অন্যান্য আসবাবপত্রগুলো যেমন সোফা ডিভান এই ধরনের আসবাব গুলোতে ভারি কভার পরিয়ে রাখা উচিত। যাতে করে গরম অনুভূত হয়। এছাড়াও অতিরিক্ত বালিশের ব্যবহার করা যেতে পারে। শীতকালে ধুলাবালি ঘরে একটু বেশি দ্রুত প্রবেশ করে। সেই ক্ষেত্রে প্রতিটি ফার্নিচার খুব ভালো করে বুঝতে হবে তা না হলে সেই ধুলাবালি থেকেও মারাত্মক পর্যায়ে এলার্জি হতে পারে।
সূত্র: ইত্তেফাক