প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস চিকিৎসার ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দাবি করেছেন থাইল্যান্ডের চিকিৎসকরা।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, কয়েকটি অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের সংমিশ্রণ করে করোনাভাইরাস আক্রান্ত এক রোগীকে সুস্থ করে তুলেছেন থাইল্যান্ডের চিকিৎসকরা।
এ বিষয়ে স্থানীয় সময় রোববার থাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, থাইল্যান্ডে অবস্থানরত করোনাভাইরাস আক্রান্ত এক চীনা নারীকে ইনফ্লুয়েঞ্জা ও এইচআইভির চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের মিশ্রণ দেয়া হয়। মাত্র ৪৮ ঘণ্টা পর ৭১ বছর বয়সী ওই নারী সুস্থ হতে থাকেন।
ওই নারীর চিকিৎসক ডা. ক্রিয়েংসাক আত্তিপর্নানিচ স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, গুরুতর অবস্থায় ওই রোগী তার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। প্রথমেই ধরা পড়ে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এর পর অ্যান্টি-ফ্লু ওষুধ ওসেলটামিভির এবং এইচআইভির চিকিৎসায় ব্যবহৃত লোপিনাভির ও রিটোনাভিরের মিশ্রণ মিলিয়ে একটি গবেষণামূলক চিকিৎসা প্রদান করি তাকে। আশ্চর্যজনকভাবে তিনি সেরে উঠতে থাকেন। বলতে গেলে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই রোগীর অবস্থার উন্নতি সন্তষজনক।
তিনি বলেন, দুদিন আগেও যে রোগী বসার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন এ ওষুধ প্রয়োগের ১২ ঘণ্টা পরেই তিনি বসতে সক্ষম হন। তার শ্বাসকষ্ট অনেকটাই কমে গেছে। আমরা দেখেছি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার ল্যাব রেজাল্টটি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পজিটিভ থেকে নেগেটিভ হয়ে গেছে।
তিনি উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেন, এই সফল গবেষণার প্রতিবেদন আমরা থাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখন শুধু ওই মিশ্রণটি নিয়ে আরও গবেষণা চালিয়ে নেয়া হবে কিনা সেই সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করছি।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দাবি করেছিল বেইজিংয়ের একটি হাসপাতালের ভাইরোলজিস্টরা।
তারাও করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় এইচআইভির ওষুধ ব্যবহার করেছেন বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। তবে তাদের এ দাবির সপক্ষে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ।
এদিকে আলজাজিরা জানিয়েছে, রোববার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে অন্তত ৩৬১ জন প্রাণ হারিয়েছে। কেবল গতকালই মারা গেছে ৫৭ জন। যাদের সবাই ভাইরাসের আঁতুড়ঘর হুবেইপ্রদেশের।
রয়টার্স জানিয়েছে, চীনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮২৯ জন। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ২০৫ জন।
শিনহুয়া নেট জানায়, উহান থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শহর হুয়াগংয়ে নতুন করে ২৪৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং অন্তত দুজন মারা গেছেন।
চীনের ৩১টি প্রদেশ এবং বিশ্বের অন্তত ২৬ দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ইতিমধ্যে।
এ খবরের পর বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
সুত্র-যুগান্তর