বছরের এই সময় ইকুয়েডরের গুয়াকুইল শহরের রাস্তায় ভিড় জমে থাকে। কিন্তু এবারের চিত্র আলাদা। ফাঁকা, শূনসান সড়কগুলো যেন খা খা করছে। জনমানব নেই। কিন্তু প্রতিদিনই রাস্তা থেকে কারও না কারও লাশ গাড়িতে তুলে নিয়ে যাচ্ছে দেশটির প্রশাসন।
বাড়ির কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাকে রাস্তায় ফেলে যাচ্ছেন প্রিয়জনরা। হাসপাতালে আর জায়গা নেই। এই মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শক্ত পরিকাঠামো নেই। ইকুয়েডর যেন করোনা মহামারীর সামনে নতজানু হয়ে বসে পড়েছে। আর কিছু করার নেই। যুদ্ধে হার স্বীকার করে নিয়েছে ইকুয়েডর।
ইকুয়েডর পুলিশ জানিয়েছে, তাদের দেশে করোনা মহামারির এপিসেন্টার গুয়াকুইল শহর থেকে গত তিন সপ্তাহে অন্তত ১ হাজার ৪০২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৭৭১টি ও হাসপাতাল থেকে ৬৩১টি লাশ। রাস্তায় যেখানে সেখানে পড়ে রয়েছে বেওয়ারিশ লাশ। অন্তেষ্টিক্রিয়ার সময়ও বাড়ির লোকের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে সেই সব লাশের শেষ ঠিকানা হচ্ছে গণকবর।
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হিমশিম খাচ্ছে ইকুয়েডর। দেশটির মরদেহ উদ্ধারকারী দলের প্রধান জর্জ ওয়েটেড জানিয়েছেন, দেশে মোট করোনা আক্রান্তের ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ গুয়াকুইল শহরের বাসিন্দা। গুয়াসেসের উপকূলীয় এই শহরটিতে এখনও পর্যন্ত ৪ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
গুয়াকুইল শহরের বাসিন্দারাই রাস্তায় এদিক ওদিক পড়ে থাকা মরদেহ তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য খবর দিচ্ছেন প্রশাসনকে। ইকুয়েডর সরকার দেশজুড়ে কারফিউ জারি করেছে। দিনের মধ্যে ১৫ ঘণ্টা বলবৎ থাকছে কারফিউ। তবে সংক্রমণ এড়ানোর জন্য এই কারফিউ যে যথেষ্ট নয় তা স্বীকার করে নিচ্ছে প্রশাসন। চলতি মাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কা করছে ইকুয়েডরের প্রশাসন।
সূত্র-বাংলাদেশ প্রতিদিন