কুইন্সের উডহ্যাভেনের বাসিন্দা এবং বিয়ানিবাজারের সন্তান নাবিরা চৌধুরী লাইজু (৪৬) ১৫ এপ্রিল বুধবার কুইন্সের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন বলে হাসপাতালের উদ্ধৃতি দিয়ে তার স্বামী কিনু চৌধুরী জানিয়েছেন।
একইদিন কুইন্সের অধিবাসী রানা আহমেদের স্ত্রী তাহেরা আহমেদও মারা গেছেন করোনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায়। এদিন সকালে ম্যারিল্যান্ডের আপার মার্লবরোর বাসিন্দা জামিলা আহমেদ পিনকি (৫০) ইন্তেকাল করেছেন।
এর আগেরদিন নিউইয়র্কে বসবাসরত এম রহমান মুক্তা (৫৫) প্রেস-বাইটেরিয়েন হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন বলে হাসপাতালের উদ্ধৃতি দিয়ে নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের নেতা হাসানুজ্জামান এ সংবাদদাতাকে জানান।
উল্লেখ্য, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারি এই মুক্তা ছিলেন রাজধানী ঢাকার নবাবগঞ্জের শাইনপুকুরের সন্তান এবং বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয়ে ব্যাংকিং ডিভিশনের সিনিয়র সেক্রেটারি আসাদুল ইসলামের ভগ্নিপতি।
নিউইয়র্কের ডাক্তার মামুন আলী (৫৯) এবং জ্যামাইকায় লন্ড্রি ব্যবসায়ী ঝন্টু মিয়ার (৪৬) প্রাণ গেছে ১৪ এপ্রিল কুইন্সের হাসপাতালে। এর আগে ৩ এপ্রিল জ্যামাইকায় বসবাসরত এবং বরিশালের ভান্ডারিয়ার সন্তান সাব্বির আহমেদ (৫০) কুইন্স হাসপাতালে মারা গেছেন।
এনিয়ে নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রে ১৩৩ বাংলাদেশির মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেল। এর অধিকাংশই পুরুষ এবং অধিকাংশেরই বয়স ছিল ৫০ বছরের অধিক।
উল্লেখ্য, ৮৬ লাখ জনঅধ্যুষিত নিউইয়র্ক সিটিতে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত মারা গেছে ১০৮৯৯ জন। অপরদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় নিউইয়র্ক স্টেটে মারা গেছে ৭৫২ জন। এ সংখ্যা আগের চেয়ে কিছু কম। সারা আমেরিকায় ১৫ এপ্রিল রাত নাগাদ মারা গেছে ৩০ হাজার ৮০০ জন।
এদিকে, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান পুনরায় খোলার লক্ষ্যে শুক্রবার থেকে নিউইয়র্ক সিটিসহ সমগ্র রাজ্যে নাম ও মুখ ঢেকে যায় এমন মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বুধবার নিউইয়র্ক স্টেটের গভর্নর এ্যান্ড্রু ক্যুমো এক নির্বাহী আদেশে আরো বলেছেন, ঘরের বাইরে গেলেই মাস্ক পরতে হবে এবং কর্মক্ষেত্র, গ্রোসারি স্টোর, ফার্মেসিসহ অত্যাবশ্যকীয় সকল স্থানে ‘সামাজিক দূরত্ব’ তথা ৬ ফুট দূরে অবস্থান করতে হবে। এক্ষেত্রে কোন ব্যতয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জরিমানা করা হবে। তবে বাস, সাবওয়ে এবং ব্যস্ততম এলাকা অতিক্রমকালে ‘সামাজিক দূরত্ব’ নীতি অনুসরণ করা সম্ভব না হলেও সকলকে মাস্ক পরতেই হবে।
স্টেট গভর্নর উল্লেখ করেছেন, করোনা ভাইরাস দমন বা নির্মুলের ভ্যাকসিন তৈরী না হওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশ বহাল থাকবে। এ সময় গভর্নর জানান, প্রয়োজনীয় এন্টি-বডি টেস্টিং সামগ্রি না পাওয়ায় অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার পরিকল্পনা সফল হতে সময় লাগবে। ফেডারেল প্রশাসন থেকে খুবই সামান্য পরিমাণের এন্টি-বডি টেস্টিং কিটস পাচ্ছি আমরা। অথচ এই রাজ্যের প্রতিটি নাগরিকেরই শরীর পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে যে, কারা সুস্থ এবং কারা করোনায় আক্রান্ত। এটি সম্ভব হলেই যারা সুস্থ তারা মাস্ক পরে কর্মস্থলে যেতে সক্ষম হবেন। আর যারা সুস্থ হন তারা চিকিৎিসকের নিয়ন্ত্রণে থাকবেন।
ক্যুমো আরো বলেন, আমরা আঞ্চলিক পর্যায়ে ৭ স্টেট একই পন্থা অবলম্বন করেছি অবরুদ্ধ থেকে সবকিছুকে মুক্তি দিতে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল করতে এখন প্রয়োজন হচ্ছে ‘এন্টি-বডি কিটস’। সূত্র-বাংলাদেশ প্রতিদিন