মহামারী করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বিয়ে, জানাজা ও লোক সমাগম হয় এমন সব সামাজিক অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করছে ইরান।
শনিবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন বন্ধের আহ্বান জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
প্রেসিডেন্টের এ ঘোষণার পরপরই এক পুলিশ কর্মকর্তা রাজধানী তেহরানে বিয়ে এবং জানাজার মতো সব ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেন। খবর মিডল ইস্ট মনিটরের।
গত বছর ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়ায় করোনাভাইরাস। এ মহামারীর বিস্তার রোধে কিছুদিন লকডাউনে ছিল ইরান। কিন্তু অর্থনীতি বাঁচাতে গত এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে দেশটির সরকার ধীরে ধীরে লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
এতে অর্থনীতির চাকা কিছুটা সচল হলেও ভাইরাসের বিস্তার উদ্বেগজনক হারে বাড়তে শুরু করে। শনিবার ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যানুযায়ী দেশে কোভিড-১৯ মহামারীতে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৬৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট আক্রান্ত দুই লাখ ৫৫ হাজার ১১৭ জন।
রুহানি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই দেশজুড়ে অনুষ্ঠান আয়োজন এবং গণজমায়েত বন্ধ করতে হবে। হোক সেটা জানাজা, বিয়ে বা পার্টি। এটা উৎসব বা সেমিনার আয়োজনের সময় নয়।’ চলতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাও স্থগিত হতে পারে বলে জানান তিনি।
ইরানের সরকারি কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন থেকেই দেশে দ্বিতীয়বারের মতো করোনাভাইরাস সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে ছড়িয়ে পড়ছে।
ভাইরাসের বিস্তার রোধে যদি এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তবে এই মহামারীতে ইরানে ৫০ থেকে ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত দেশটির টাস্কফোর্স কমিটি।
কমিটির উপদেষ্টা হোসেইন কেনাতি বলেন, ‘ভাইরাসের দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ শুরু হতে যাচ্ছে এবং সেটি আরও বেশি প্রাণঘাতী হবে।’ যুক্তরাষ্ট্রের নানা নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের অর্থনীতি আগে থেকেই ভঙ্গুর হয়ে আছে। ফলে দীর্ঘ লকডাউনের ধাক্কা সামলানো সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে রুহানি বলেন, ‘সব থেকে সহজ উপায়- সব কিছু বন্ধ করে দেয়া। কিন্তু কয়েকদিন পরেই জনগণ এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসবে, যার ফলে গোলযোগ সৃষ্টি হবে। ক্ষুধা, দারিদ্র্য এবং চাপ তৈরি হবে। এ কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য দীর্ঘদিন বন্ধ রাখা সম্ভব হবে না।’ সুত্র-যুগান্তর