কুষ্টিয়া শহরের জেলখানা মোড় থেকে ডান দিকে একটি রাস্তা চলে গেছে চৌড়হাস ফুলতলায়। তার আগেই এরশাদনগর নামক বস্তি এলাকা। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ প্রকল্পে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ তে একটা ঘর বরাদ্দ পেয়েছিলেন ‘বুড়ি হইলাম তোর কারণে’ গানের গায়িকা কাঙ্গালিনী সুফিয়া।
সেখানেই এক মেয়ে ও নাতনি নিয়ে তার বসবাস। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়েছে। তাছাড়া আগের মতো আর গান গাইতে পারেন না। আর এখন করোনার প্রাদুর্ভাবে সব কিছু বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন তিনি।
কাঙ্গালিনী সুফিয়াকে নিয়ে সম্প্রতি কুদ্দুস বয়াতির একটি ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আনেন কেন্দ্রীয় ছাত্র লীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। এরপর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির সাথে আলাপ করে কাঙ্গালিনী সুফিয়াকে খাদ্য সামগ্রীর পাশাপাশি নগদ অর্থ দিয়ে তার পাশে দাঁড়ায়।
শনিবার (২১ মে) বিকালে জেলা ছাত্র লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান অনিক খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন কাঙালিনী সুফিয়ার হাতে।
জেলা ছাত্র লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান অনিক জানান, কাঙ্গালিনী সুফিয়ার বর্তমান অবস্থা শোচনীয়। তার ঘরে খাবার নেই, নেই ওষুধ কেনার টাকা। করোনা পরিস্থিতিতে কুষ্টিয়ায় আটকা পড়ে। তার আগে কুদ্দুস বয়াতীর একটি ভিডিওতে সাহায্য চেয়ে বাঁচার আর্তনাদ জানান এ শিল্পী। বিষয় টি নজরে আনেন কেন্দ্রীয় ছাত্র লীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। এরপর ছাত্র লীগের সার্বিক সহযোগিতা এবং তত্বাবধানে বাংলাদেশ ছাত্র লীগের পক্ষ থেকে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার সামগ্রী ও অর্থ সহায়তা প্রদান করি।
প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতাও কামনা করে কাঙ্গালিনী সুফিয়ার বলেন, গতবছর কুষ্টিয়ার ডিসি অফিস থেকে ১০ কেজি চাল ও এক কেজি আলু পেয়েছিলাম। মাঝে লালন একাডেমি থেকেও কিছু খাদ্য সামগ্রী পেয়েছিলাম সেগুলোও নেই। আমার বয়স হয়েছে। অসুখ বিসুখ লেগেই আছে। ওষুধ কেনার টাকাও নেই। তেমন কেউ খোঁজও নেয় না। এখানে আমি যে ঘরে থাকি, একটু বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। থাকার মতো পরিবেশ নেই। প্রতি মাসে অনেক টাকার ওষুধ লাগে।
প্রসঙ্গত, কাঙ্গালিনী সুফিয়া প্রায় ৩০টি জাতীয় ও ১০টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন। গান রচনা করেছেন প্রায় ৫০০টি। তার বিখ্যাত গানের মধ্যে রয়েছে কোনবা পথে নিতাইগঞ্জে যাই ও পরাণের বান্ধব রে, বুড়ি হইলাম তোর কারণে।