কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পুলিশের সাথে বাকবিতন্ডায় রফিকুল ইসলাম দুদু (৪৫) নামে এক চা বিক্রেতা নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ পুলিশ সদস্যকে বেধড়ক পিটিয়ে অবরুদ্ধ করে স্থানীয় জনতারা। এ ঘটনায় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশের একটি মোটরসাইকেল।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম ৪নং ব্রিজের নিকট এ ঘটনা ঘটে।
এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। রাত দশটার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ এবং বিজিবি অভিযান চালিয়ে অবরুদ্ধ পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্ধার করে।
নিহত রফিকুল ইসলাম দুদু (৪৫)। তিনি চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন জাসদের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাকের ছোট ভাই এবং ওই এলাকার আজিজ মণ্ডলের পুত্র।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভেড়ামারা থানা পুলিশের এসআই সালাউদ্দীন সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযান চালায়। মাদক ট্যাপেন্ডলসহ তাকে হাতে নাতে আটক করে পুলিশ। এ সময় পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ব্রিজ থেকে রফিকুল ইসলাম দুদু লাফ দেন ওই মাদক ব্যবসায়ী। পুলিশ সেখানে ধাওয়া করে তাকে আটক করে। এ সময় ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষনা করে।
এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জাসদ নেতাকর্মীরা পুলিশের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে, এমন অভিযোগ এনে পুলিশকে ধাওয়া দেয়। এর মধ্যে ৩ জনকে ধরে ফেলে বেধড়ক পেটায়। তাদেরকে জাসদ অফিসে আটকে রাখা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি।
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, নিহত রফিকুল ইসলাম দুদু একজন মাদক ব্যবসায়ী। তাকে আটকের উদ্দেশেই পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় পালাতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়। স্থানীয় জাসদের নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পুলিশের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় এবং ৩ পুলিশকে বেধড়ক মারপিট করে জাসদ অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে ভেড়ামারা থানার পুলিশ অভিযান চালিয়েও তাদের উদ্ধার করতে পারেনি। পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। রাত ১০টার দিকে অবরুদ্ধ ৩ পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধার করা হয়।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা বলেন, পুলিশ দুদুকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। এসময় সে যেতে চায়নি। এ জন্য পুলিশ তাকে মারধর করে করে মেরে ফেলেছে। এই হত্যার দায় পুলিশের। বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
কুষ্টিয়ার এসপি মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, ৩ পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ এবং বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।