কুষ্টিয়ায় চেক জালিয়াতি মামলায় চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। বুধবার বিকেলের দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।
১০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের লতিফ মোল্লার ছেলে সবুজ মোল্লা ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানার পূর্ব আব্দালপুর গ্রামের মৃত তবিবুর রহমানের ছেলে শফিউদ্দিন।
৭ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানার ঝাউদিয়া গ্রামের দরবেশ ফকিরের জামাই মজনু খা। তবে মজনুর বাবার নাম আব্দুর রহিম এবং মাদারীপুর সদর উপজেলার গুনশি গ্রামের আক্কেল আলীর ছেলে নান্নু শেখ।
রায় ঘোষণার সময় আসামি শফিউদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পরপরই পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয় তাকে। অপর তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ৭ নভেম্বর সোনালী ব্যাংকের হরিনারায়ণপুর শাখায় রাহাত টেইলার্স অ্যান্ড বস্ত্রবিতান প্রতিষ্ঠানের মালিক আজিজুল হকের নামে চলতি হিসাব খোলেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ মোল্লার ছেলে সবুজ মোল্লা। ওই হিসাবের বিপরীতে একই দিন ১০ পাতার একটি চেক বই সবুজকে ইস্যু করে ব্যাংক।
সবুজের কাছ থেকে সেই চেক বই নিয়ে ২০১২ সালের ১৮ নভেম্বর দুটি পাতার মাধ্যমে ৬ লাখ টাকা উত্তোলন করেন কামাল ও আজম নামের দুই ব্যক্তি। এতে জড়িত থাকেন সোনালী ব্যাংক হরিনারায়ণপুর শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এ ঘটনায় ২০১২ সালের ২০ নভেম্বর সোনালী ব্যাংকের হরিনারায়ণপুর শাখার ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় একটি অভিযোগ করেন।
তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৬ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম ও তাপস সরকার। জন্য সাক্ষীর সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আসামি সফিউদ্দিন ও সবুজকে ১০ বছর এবং মজনু ও নান্নুকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বলেন, চেক জালিয়াতি মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামি পলাতক রয়েছেন। এ মামলায় আদালতে উপস্থিত ছিলেন একজন আসামি। তাকে রায় ঘোষণার পরপরই পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।