কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিভিন্ন ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়েছে সিভিল সার্জন। অভিযানে ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক ও স্বাস্থ্যসেবাসহ ৫ টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও ১ টি ক্লিনিকে সতর্কীকরণ করা হয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে কুমারখালির বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা মুলক প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এএইচএম আনোয়ারুল ইসলাম।
এসময় কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আকুল উদ্দিন, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান তালুকদার সহ স্বাস্থ্য বিভাগের ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সিভিল সার্জন ডা. এএইচএম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, সারা বাংলাদেশে নিবন্ধনহীন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তারই ধারাবাহিকতায় আজ দিন ব্যাপী কুমারখালিতে অভিযান চালিয়ে প্রতীক আধুনিক ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, প্রদীপ ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বিশ্বাস ডেন্টাল কেয়ার,শিমুল ডেন্টাল কেয়ার, কুমারখালী ডায়াবেটিক সমিতি বন্ধের নির্দেশ ও নোভা ক্লিনিককে সতর্ক করা হয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, জেলায় অনুমোদনপ্রাপ্ত ১৪০টি প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যেও বেশকিছুর লাইসেন্স মেয়াদউত্তীর্ণ হয়ে গেছে। কারো কারো পরিবেশসহ অন্য সহযোগী সংস্থার অনুমোদনও নেই।
তবে অবাক করা তথ্য হলো এর বাইরেও অনুমোদনহীন ৬০ থেকে ৭০টি বেসরকারি ক্লিনিক হাসপাতাল অবাদে চলছে। সুষ্ঠু তদারকির অভাবে এসব হাসপাতাল ক্লিনিকের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেঁড়েই চলেছে। পাল্লা দিয়ে চিকিৎসার নামে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণাও বাড়ছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ ও জেলার সচেতন মহলও।
প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়া জেলার পৌর শহরসহ উপজেলা শহরের অলিগলিতে গড়ে উঠেছে নাম সর্বস্ব ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অনুমোদনবিহীন এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায়ই রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। নেই নিজস্ব ডাক্তার, প্রশিক্ষিত নার্স ও দক্ষ টেকনিশিয়ান। এছাড়ো নেই ভালোমানের কোনো ইকুইপমেন্টও। যে কেউ মন চাইলেই ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে বসছেন।
শহরে ক্লিনিকের জন্য রেডি বিল্ডিং, মেশিনপত্র অহরহ মিলছে। এই শহরে রাতে চিন্তা করে সকালেই ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক হওয়া যায়। এভাবেই চলছে এ জেলায় ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবসা। এছাড়া টাকার জন্য রোগীকে নির্যাতন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মান নিয়েও অভিযোগ উঠছে হরহামেশা। এ যেন চিকিৎসার নামে চলছে বাণিজ্য। এতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরদারির অভাবকে দুষছেন ভুক্তভোগীরা।