কুষ্টিয়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
গতকাল সোমবার কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) তহিদুল ইসলাম মামলা দুটি আমলে নেন।
দুদক কুষ্টিয়া জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জাকারিয়া মামলাটি দায়ের করেন বলে দুদকের আইনজীবী আল-মুজাহিদ মিঠু জানান।
আসামিরা হলেন কুষ্টিয়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান (৫৭) ও তার স্ত্রী বিলকিস রহমান (৪৭)।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০২ সালের ৮ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ১৮ আগস্ট পর্যন্ত খলিলুর রহমানের স্ত্রী বিলকিস রহমান জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার ৫৬৪ টাকা আহরণ করেছেন।
তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়।
খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ১৮ আগস্ট সময়ের মধ্যে ৫২ লাখ ৫৫ হাজার ১৬৯ টাকা আয়ের বৈধ কোনো উৎস দেখাতে পারেননি।
তার বিরুদ্ধেও একই ধারায় মামলা হয়েছে।
এদিকে দুদকের এই মামলা দায়েরের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে শহরে লোকজন স্বস্তি প্রকাশ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক এসএম কাদেরী শাকিল বলেন, “অনেক দেরিতে হলেও দুদকের এই পদক্ষেপে আমি খুশি। তবে দুদক কোটি টাকার সম্পত্তির যে হিসাব দিচ্ছে সেই পরিমাণটা আমার মনে হয় আরও অধিক হওয়ার কথা। যাই হোক, ঠিক তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারসহ বিদ্যালয়টিকে রক্ষার দাবি করছি।”
কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চিকিৎসক নেতা আমিনুল হক রতন বলেন, “এতদিন আমাদের চোখের সামনে তিল তিল করে বিদ্যালয়টির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছিল। আমরা অনেকেই দেখেছি; কিন্তু কেউ মুখ খুলে কিছু বলতে পারিনি।”
এই প্রতিষ্ঠানটি কিছু স্বার্থন্বেষী প্রভাবশালী মহলের অর্থ আয়ের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “দুদক এতোদিন পর মামলাটি করলেও আমি বলতে চাই, এই প্রতিষ্ঠানটিকে লুটপাট করে এর অস্তিত্বকে যারা বিপন্নের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে তাদের সকলের মুখোশ উন্মোচিত হওয়া দরকার। প্রকৃতপক্ষে প্রতিষ্ঠানটির কী পরিমাণ সম্পদ লুটপাট হয়েছে তার ঠিক পরিসংখ্যান আমরা জানতে চাই।”
দুদকের মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চেয়ে কুষ্টিয়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমানের মোবাইলে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এ কে এম মুনির বলেন, “দুদকের মামলার বিষয়ে আমি শুনেছি। এটা প্রধান শিক্ষকের ব্যক্তিগত বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত। স্কুলের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। তাছাড়া দুদক যে মামলা করেছে তার মেরিট দুর্বল। এ মামলায় শেষ পর্যন্ত কিছু হবে না।”