দৈনন্দিন জীবনে খাদ্যতালিকায় মাশরুম রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। মাশরুমের মধ্যে প্রায় ৭ হাজার প্রজাতি আছে, তন্মধ্যে ১০০ প্রজাতির মতো মানুষের ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। এটি মাংসল ছত্রাক থেকে হয়, যা আদিকাল থেকে সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
মাশরুম একটি এন্টিঅক্সিডেন্ট ধারণকারী উচ্চতর খাদ্য উপাদান যা স্তন ক্যান্সার, উচ্চ কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং মেদ প্রতিরোধে সাহায্য করে। গর্ভবতী মহিলাদের মাশরুম রক্তস্বল্পতার দূর করে। মাশরুমের মধ্যে আলু, গাজর এবং বীটের মতো বেশি প্রোটিন থাকে যা শরীরের ওজন কমানোর জন্য ভালো উৎস।
মাশরুমের প্রোটিন অতি উন্নতমানের। একটি পরিপূর্ণ প্রোটিনের পূর্বশর্ত হলো মানব দেহের অত্যাবশ্যকীয় ৯টি অ্যাসিডের উপস্থিতি। মাশরুমে এই ৯টি অ্যামাইনো অ্যাসিড বিদ্যমান। ১০০ গ্রাম শুকনো মাশরুমে ২৫-৩৫ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। অন্যদিকে, মাছ, মাংস, ডিম এর মধ্যে ১০০ গ্রাম মাছ, মাংস ও ডিমে প্রোটিনের পরিমাণ হলো যথাক্রমে ১৬-২২ গ্রাম , ২২-২৫ গ্রাম ও ১৩ গ্রাম মাত্র।
মাশরুমে শস্য, ডাল, শাক সবজি হতে অনেক বেশি প্রোটিন এবং অ্যামাইনো এসিড বিদ্যমান থাকে যার পরিমাণ ১টি ডিমের চেয়েও বেশি। মাশরুমে নাইসিন নামক খনিজ পদার্থ রয়েছে, যা অন্য কোন সবজির চেয়ে দশ গুণ বেশি।
সূর্যের আলোর সংস্পর্শে যে মাশরুম উৎপন্ন হয় তাতে প্রচুর ভিটামিন ডি থাকে, যা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের শোষণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ক্যান্সার ও টিউমার প্রতিরোধে মাশরুম বেশ উপকারী। নিয়মিত মাশরুম খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার ও প্রোস্টেট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। মাশরুমের ফাইটোকেমিক্যাল টিউমারের বৃদ্ধিতে বাঁধার সৃষ্টি করে।
গবেষণায় জানা যায়, ‘লাল মাংসের পরিবর্তে সাদা মাশরুম গ্রহণ করলে ওজন কমে। মাশরুমে উচ্চমাত্রার ফাইবার বা আঁশ থাকে, সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে এবং প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। অন্যান্য প্রাণিজ আমিষ যেমন -মাছ, মাংস, ডিম চর্বি সম্পৃক্ত অবস্থায় থাকায় অতি তা মাত্রায় গ্রহণ করলে শরীরে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পেয়ে মেদ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ প্রভৃতি জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।’
মাশরুমের ফাইবার বা আঁশ পাকস্থলী দীর্ঘক্ষণ ভরা রাখতে সাহায্য করে। মাশরুম রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ওজন কমাতে সহায়তা করে। মাশরুম ঠাণ্ডা জনিত রোগ প্রতিরোধ করে। ত্বককে নরম ও কোমল রাখে মাশরুম কারণ এতে ৮০-৯০ ভাগ পানি থাকে।