ক্যান্সার মানেই মৃত্যু; আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি সেই ধারণা খানিকটা বদলাতে পারলেও এখনো বিশ্বজুড়ে ২য় সর্বোচ্চ মৃত্যু ঘটে এই রোগেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব বলছে, শুধু ২০১৮ সালেই প্রায় ১ কোটি লোক মারা গিয়েছে ক্যান্সারে। অর্থাৎ প্রতি ছয়জনে একজন।
বাংলাদেশে ২০১৮ সালে নতুন করে কর্কটরোগে আক্রান্ত হন দেড় লাখের উপর মানুষ। আর মারা যান এক লাখের উপর। এর একটা বড় কারণ মনে করা হয় ক্যান্সার চিকিৎসায় বাংলাদেশের সীমাবদ্ধতা।
সীমিত আকারে কেমো আর রেডিও থেরাপির পাশাপাশি খুবই সম্প্রতি দেশের দু-একটি প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হয় বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট। তবে এক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা থেকেই গেছে।
আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন এবং সেগুলো পরিচালনার যথাযথ পরিবেশ সবসময়ই বড় চ্যালেঞ্জ। এর মাঝেই বাংলাদেশের একটি বেসরকারি হাসপাতাল ক্যান্সার চিকিৎসায় প্রথমবারের মতো সংযোজন করেছে টোটাল বডি রেডিয়েশন বা টিবিআই।
এভারকেয়ার হাসপাতালের হেমাটোলজি ও স্টেম সেল ট্রান্সপ্ল্যান্ট বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ’র হাত ধরেই এর কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে।
ডা. আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ বলেন, এই পদ্ধতিতে কেমোথেরাপির পাশাপাশি যে রেডিয়েশনের প্রয়োজন হয় তা নরমাল রেডিয়েশন নয়, এটা হল টোটাল বডি রেডিয়েশন। রোগীর সারা শরীরে নির্দিষ্ট মাত্রায় রেডিয়েশন দেওয়া হয়। এটা যে আমরা প্রথম চালু করতে পেরেছি যার কারণে আমরা এখন অনেকগুলো রোগ যেগুলো আগে কেমোথেরাপি দিয়ে ঠিক করা যেত না। রেডিয়েশনটা দেওয়ার জন্য খুব হাইটেক মেশিনের প্রয়োজন হয়। এর জন্য বিশেষ একটা রুম থাকতে হবে। এই পদ্ধতিতে রোগীকে এমন রুমে রাখা হয় যেখানে যেকেউ ঢুকতে পারবে না। এই বিশেষ রুমে খাবার বা পানি সরবরাহের ক্ষেত্রেও রয়েছে বিষেশ ব্যবস্থা।
টিবিআই প্রশস্ত করেছে দেশেই সব ধরণের বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টের পথ। সংক্ষেপে বিএমটি বা অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন দুভাবে হয়ে থাকে। একটা অটোলেগাস যেখানে রোগীর শরীরের এক অংশ থেকে স্টেমসেল নিয়ে আবার তার শরীরেই দেয়া হয়। অন্যটি অ্যালোজেনিক অর্থাৎ আরেকজনের শরীর থেকে।
তবে ক্যান্সার চিকিৎসায় সবশেষ যেটি যুক্ত হয়েছে তা হল হ্যাপলোট্রান্সপ্ল্যান্ট। বাংলাদেশে সম্প্রতি যেটার প্রথম সফল প্রতিস্থাপন হয়েছে ডা. আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ এর মাধ্যমেই।
সূত্র: বিবিসি বাংলা