বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ওপর মার্কিন ভিসানীতি প্রয়োগের পর সাংবাদিক নেতাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এটিকে গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপও বলছেন তারা। একই সাথে পিটার হাসের বক্তব্য প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। যদিও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ঘোষণার সাথে দ্বিমত পোষণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, “স্বাধীন দেশের গণমাধ্যমের ওপর নিষেজ্ঞার আরোপের কথা পিটার হাস এভাবে বলতে পারেন না। কার বাংলাদেশ স্বাধীন স্বার্বভৌম দেশ। ভিসা নীতি আরোপ করলে সাংবাদিক সমাজে অস্বস্তি সৃষ্টি হবে। যেসব সাংবাদিকদের সন্তান বিদেশে লেখাপড়া করে তারা মত প্রকাশে দ্বিধান্বিত বোধ করবেন।”
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম বলেন, “গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করে কী গণতন্ত্র নিশ্চিত করা আদৌ সম্ভব? বাংলাদেশের ইতিহাসে খারাপ নজির সৃষ্টি করেছেন পিটার হাস। গণমাধ্যম পরোক্ষভাবে চাপ প্রয়োগ করেছেন তিনি। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরোধীতাকারীরা যখন গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া স্বাভাবিক। যুক্তরাষ্ট্র একটি স্বাধীন দেশের গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে যা খুবই দুঃখজনক।”
ঢাকা ডিপ্লোমেট ডট কম এবং সংবাদ সারাবেলার সম্পদক আব্দুল মজিদ বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে যাদের ভুমিকা রয়েছে, যেমন আইন শৃঙখলা ররক্ষাকারী বাহিনী, সরকারি কর্মকর্তা, সরকারি দল ও বিরোধী দল এবং গণমাধ্যম, ভিসানীতির নামে তাদেরকেই হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রথমত, একটি স্বাধীন দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা বা প্রক্রিয়া নিয়ে অযাচিত কথা বলে এক ধরনের হস্তক্ষেপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যা অগ্রহণযোগ্য। ভিসানীতি কার্যকরের ঘোষণায় মূলত তারা স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারবে না।”
সিলেটের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও দৈনিক উত্তরপূর্ব পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক তাপস দাশ পুরকায়স্থ বলেন, “কোন বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে তা নির্ধারণ করবে ওয়াশিংটন। নিষেধাজ্ঞায় না থাকা বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা কূটনীতিক সৃষ্টাচার বর্হিভূত কাজ। আর গণমাধ্যমকে ভিসানীতির আওতায় আনলে গণতন্ত্র বিকশিত নয়, নিয়ন্ত্রিত হবে।”
গত ২৪ সেপ্টেম্বর একটি বেসরকারি চ্যানেলের কার্যালয়ে এসে সাক্ষাৎকারে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, সরকারি দল, বিরোধী দল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর আগামীতে গণমাধ্যমও ভিসানীতিতে যুক্ত হবে।