মেহেরপুরের গাংনীতে নানা জটিলতার অজুহাতে আজো শুরু করা হয়নি সরকাররি ভাবে গম ক্রয়। এতে করে চাষিরা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অনেকেই প্রয়োজনে খোলা বাজারে গম বিক্রি করে দিয়েছেন। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তর বলছে অনতিবিলম্বে এ কার্যক্রম শুরু হবে।
জানা গেছে, গত ৬ মে এ উপজেলা গম ক্রয় শুরু হয়। ১৮৪৬ মেট্রিকটন লক্ষ্য মাত্রা গম ক্রয় শুরু করা হলেও মাত্র ১৩ টন গম ক্রয় করার পরপরই হঠাৎ ক্রয় কার্যক্রম স্থগিত করেন উপজেলা প্রশাসন। স্থানীয়ভাবে কৃষকদের তালিকা সংশোধন ও ত্রুটি রয়েছে বলে জনৈক আকরামুৃল হক একটি আবেদন করলে উপজেলা প্রশাসন গম ক্রয় বন্ধ রেখে তালিকা সংশোধনের জন্য কৃষি অফিসকে আদেশ দেন। প্রথম পর্যায়ে কৃষি অফিস শুধু সরকারী গুদামে গম বিক্রি করতে আগ্রহী ২১৯৫ জনের তালিকা প্রদান করলেও পরবর্তীতে ৬০৪২ জনের তালিকা প্রস্তুত করে খাদ্য অফিসে প্রদান করা হয় পহেলা জুন।
গাংনী উপজেলা ওসিএলএসডি মতিয়ার রহমান জানান, কৃষি অফিস প্রথমে যে তালিকা প্রদান করে সে অনুযায়ি প্রতিজন কৃষকের কাছ থেকে সর্বোচ্চ তিন টন গম ক্রয় করা যাবে মর্মে গম ক্রয় শুরু করা হয়। কিন্তু একটি আবেদনের কারণে উপজেলা প্রশাসন গম ক্রয় বন্ধ রাখে। পরে কৃষি অফিস তালিকা সংশোধন করে পহেলা জুন অত্র অফিসে প্রেরণ করেন। তালিকা প্রস্তুত করতে দেরী হওয়ায় গম ক্রয় কার্যক্রম দেরিতে শুরু করতে হচ্ছে।
একটি সুত্র জানায়, প্রতি বছরই চাষিদের নামের তালিকা করতে দেরী হয় এবং গম ক্রয় করতেও বিলম্ব ঘটে। ফলে চাষিরা গম বাইরে বিক্রি করায় সরকারী গুদামে গম বিক্রি করতে পারে না। এতে করে চাষিদের কার্ডের বিপরীতে ব্যবসায়িরা গম বিক্রি করে। তাছাড়া স্থানীয় রাজনৈতিক দন্দের কারনেও গম ক্রয় দেরি হয় । ফলে যে সময় চাষিরা গম বিক্রি করে থাকেন তখন সরকারি ভাবে গম ক্রয় করা হয়না। স্থানীয় চাষীদের গম ফুরিয়ে যাবার পর গম ক্রয় শুরু হলে প্রকৃত গম চাষিরা গম বিক্রি থেকে বঞ্চিত হয় বলে জানান অনেকেই।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম সাহাবুদ্দীন আহমেদ জানান, প্রথমে যারা গম বিক্রিতে আগ্রহী শুধু তাদের নামটি তালিকা করে প্রদান করা হয়েছিল। পরে উপজেলা প্রশাসন থেকে সকল গম চাষির তালিকা দিতে বলা হলে নতুন করে তালিকা করা হয়। এজন্য একটু দেরী হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বাইরে বাজার দর আর সরকারী দর একই ফলে অনেকেই সরকারী গুদামে গম বিক্রির অপেক্ষা না করেই বাইরে গম বিক্রি করছে। এখন অনেক কৃষকেরই ঘরে গম নেই। করোনা পরিস্থিতির কারনে এবছর গম ক্রয় বিলম্ব হয়েছে বলে দাবী কৃষি অফিসের।
এদিকে উপজেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয় ইতোমধ্যে লটারী করে কৃষক বাছাই করা হয়েছে। তাড়াতাড়িই শুরু করা হবে গম ক্রয়।