মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিভিন্ন কিন্ডার গার্টেন স্কুলগুলোতে পরীক্ষা বাড়িতে নেয়ার প্রস্তুতি চলছে। স্কুলগুলো নানা কৌশল অবলম্বন করে অভিভাবকদের কাছ থেকে বকেয়া বেতন ও পরীক্ষার ফিস আদায় করছে।
সেই সাথে স্ব-স্ব শিক্ষার্থীর বাড়িতে পরীক্ষা নেয়ার জন্য খাতা ও প্রশ্নপত্র সরবরাহ করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। সরকারি প্রজ্ঞাপন উপেক্ষা করে পরীক্ষার ছলে বেতন ও পরীক্ষার ফিস আদায়ে সচেতন মহলের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসন ব্যাবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেও তা কার্যকরী হয়নি।
জানাগেছে,গাংনী উপজেলায় এসোসিয়েশন ভুক্ত কিন্ডার গার্টেন স্কুল রয়েছে মোট ২৬ টি। ওই সব স্কুলগুলি শিশু শ্রেনী থেকে শুরু করে ১০শ শ্রেনী পর্যন্ত ক্লাস করিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নামে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে শিক্ষার্থীরা।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সারাদেশে সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখতে দোকান পাট ও যানচলাচল বন্ধ ঘোষনা করেন এবং শিশু সুরক্ষার কারনে সরকারি বেসরকারি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করে সরকার। দফায় দফায় সাধারণ ছুটি বৃদ্ধি করে সরকার। পরে পরীক্ষামুলক সাধারণ ছুটি তুলে নেয়ায় দিনদিন বেড়েই চলেছে করোনা রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যের সংখ্যা।
সরকারি সিদ্ধান্তে সর্বশেষ ১৪ই জুন ৩৮.০০৭.০৩৩.০০৪.৪৬.০০.২০১০/১২৩নং স্মারকে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে সকল সরকারি, বেসরকারি ও কিন্টার স্কুল বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও সরকারি এ প্রজ্ঞাপনকে উপেক্ষা করছে গাংনীর অধিকাংশ কিন্ডার গার্টেন ও বেসরকারি স্কুল।
গাংনী উপজেলার জোড়পুকুরিয়া সানরাইজ কিন্ডার গার্টেন স্কুল, সাহারবাটি বাজারের সাহারবাটি রুপায়ন জুনিয়র হাই স্কুল,গাংনী খাদ্যগুদামের সম্মুখে গাংনী প্রি-ক্যাডেট স্কুল,গাংনী ফুলকুড়ি,আলমদিনা কিন্ডার গার্টেন স্কুলসহ কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশন ভুক্তসহ কিন্ডার গার্টেন ও বেসরকারি স্কুলগুলিতে বেতন ও পরিক্ষার ফিস আদায়ে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
শিক্ষার্থী অভিভাবকদের বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বকেয়া বেতন ও পরীক্ষার ফিস পরিশোধ করে খাতা ও প্রশ্ন পত্র সংগ্রহ করতে জোর তাগিদ দেন স্ব-স্ব স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ দুর্যোগ কালিন মুহুর্তে অনেক অভিভাবকই অর্থ জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে এমন অভিযোগ তাদের। অনেকেই নিরুপাই হয়ে ধারদেনা করে প্রশ্ন পত্র ও খাতা সয়গ্রহ করতে ভিড়জমায় স্কুলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক শিক্ষার্থী অভিভবকগন জানিয়েছেন, স্কুলের শিক্ষকরা আমাদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বেতন ও ফিস পরিশোধ করে খাতা ও প্রশ্ন পত্র সংগ্রহ করতে বল্লে আমরা তা নিতে এসেছি। তবে বাড়িতে বসেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান অভিভবকরা।
সাহারবাটি রুপায়ন জুনিয়র স্কুলের পরিচালক ইয়াছিন আলী পরীক্ষা বা ফিস আদায় বন্ধের কথা বল্লেও বাস্তবে ফিস ও বেতন আদায়ের ধুম দেখা গেছে। গাংনী প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিন বলেন, আমরা প্রাথমিক অবস্থায় শুরু করেছিলাম কিন্তু পরে তা বন্ধ করে দিয়েছি।
প্রশ্নপত্র সরবরাহ ও ছাপা নিদের্শনায় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সাথে যোগাযোগ না করেই মনগড়া সিদ্ধান্তে পুর্বপ্রস্ততি নিয়ে প্রশ্ন ছাপা ও সররাহরে ব্যাপারে তিনি বলেন,আমাদের কোন নির্দেশনার দরকার হয়না।
জোড়পুকুরিয়া সানরাইজ কিন্ডার গার্টেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক আ.ফ.ম সামসুল কামাল টলা বলেন, আমরা একটি সাজেশন তৈরী করেছি শুধু মাত্র শিক্ষার্থীরা বাড়িতে বসে লেখা পড়ায় ফিরে আসে এবং মনোযোগী হয়।
গাংনী ফুলকুড়ি কিন্ডার গার্টেন ও জেলা কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, এটি পরীক্ষা নয়, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় মনোযোগী করা এবং পারিবারিক চাপে রাখার কৌশল মাত্র। আমার স্কুলের শিক্ষার্থীদের এ পরীক্ষায় কোন নম্বর দেয়া হবেনা, অন্য স্কুল কি করবে তা জানিনা।
গাংনী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আলাউদ্দীন জানান, কিন্ডার গার্টেন স্কুল গুলি আমাদের অর্ন্তভুক্ত নয়। ওরা এসাসিয়েশন ভুক্ত। বিধায় ওদের আমরা কন্ট্রেল করতে পারিনা। ওদেরকে এসোসিয়েশন নিয়ন্ত্রণ করবে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজা মোহাম্মদ সেলিম শাহনেওয়াজ বলেন আমি বিষয়টি দেখছি।
মেপ্র/এমএফআর