প্রবসী স্বামীর দেয়া জমানো পাওনা টাকা চাইতে গেলে পাওনাদারকে টাকা না দিয়ে বিষ খেয়ে মরতে বলে দেনাদার। অবশেষে রাগে ও ক্ষোভে ওই বিষপান করে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন প্রবাসীর স্ত্রী রেক্সোনা খাতুন (৩০)।
রেক্সোনা গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার সন্ধ্যারাতে গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা পশ্চিমপাড়ায়। রেক্সোনা ওই গ্রামের সৌাদ প্রবাসী জিয়ারুল ইসলামের স্ত্রী।
জানা গেছে, জিয়ারুল ইসলাম বিগত ৫ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমায়। সেখান থেকে যা আয় হয় তা স্ত্রী রেক্সোনার কাছে জমা রাখে বাড়ি তৈরীর জন্য। এভাবে ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা হয়।
ওই টাকা প্রতিবেশি হার্ডওয়ার ব্যবসায়ি মিজানুর রহমানের কাছে রড সিমেন্ট কেনার জন্য জমা রাখেন রেক্সনা। কিছু টাকা ব্যাংক এশিয়াতে জমা রাখার জন্যও মিজানুর রহমানকে দেন।
চতুর মিজানুর ওই টাকা জমা না দিয়ে বিভিন্ন মোবাইল থেকে ব্যাংকের নাম লিখে ভুয়া মেসেজ রেক্সোনার মোবাইল ফোনে প্রেরণ করে।
এদিকে স্বামি জিয়ারুল বিদেশ থেকে বাড়ি আসেন গেল ২৬ মার্চ। পরে এ টাকার হিসেব চান রেক্সোনার কাছে। রেক্সোনা মিজানুরের কাছে টাকার বিষয় জানতে চান রড সিমেন্ট কবে দেবেন ও টাকা ফেরত দিতে বলেন।
এসময় মিজানুর টাকা না দিয়ে রেক্সোনার হাতে বিষের বোতন ধরিয়ে দেন এবং বিষ খেয়ে মরতে বলেন। হার্ডওয়ার ব্যাবসায়ী মিজানুরের প্রতারনায় দিশেহারা হয়ে ওঠে রেক্সেনা।
টাকা হারানোর শোক এবং স্বামীর কাছে টাকার হিসেব দেয়া নেয়া সেই সাথে মিজানুরের বিষের বোতল হাতে তুলে দেয়াটাকে ভালভাবে গ্রহণ করতে পারেনি রেক্সোনা।
অবশেষে ওই দোকানেই বিষপান করেন তিনি। রেক্সোনার মামা নাহারুল ও ভাতিজি আলমাস তাকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। বর্তমানে রেক্সোনার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক খোকন রেজা।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে এবং একজন মানুষের আমানতের খেয়ানতকারির শাস্তির দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা আরো জানায় মিজানুর রহমান এলাকায় এর আগেও বহু মানুষের সাথে প্রতারণা করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। ইতোপুর্বে এক নারীর সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকার অপরাধে গ্রাম্য সালিশে তার বিচার হয়।
মিজানুর রহমানকে এবিষয়ে জানতে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে এবং তার গ্রামে গিয়ে খোঁজ করা হলে তিনি আত্নগোপন করায় মন্তব্য লেখা সম্ভব হয়নি।
গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, এবিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। তবে অভিযোগ করলে ওই নারীকে আইনী সহয়তা প্রদান করা হবে।