পরিচয়টা ছিল ফেইসবুকে। তারপর থেকে শুরু হয় প্রেমের। আর সেই প্রেমের সূত্র ধরেই গভীরতা সৃষ্টি হয় তিন সন্তানের জননী স্কুল শিক্ষিকা মোনালিসা ওরফে লোপা ও দুবাই প্রবাস ফেরৎ নরশিংদীর হুমায়ন কবীরের মধ্যে। গভীর প্রেম থেকেই ঘর বাঁধার স্বপ্ন জাগে এ পরোকীয়া জুটির।
স্কুল শিক্ষিকা লোপা চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার মোছাইনগর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে আসাদুজ্জামানের স্ত্রী।
স্ত্রী লোপা চুয়াডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং আসাদুজ্জামান একটি ওষধ কোম্পানীর আঞ্চলিক কর্মকর্তা। চাকুরির সুবাধে চুয়াডাঙ্গা শহরে ভাড়া বাসাতে থাকতেন।
তিন সন্তানের জননি লোপা ও তার প্রেমিক নরশিংদীর বাকেরনগর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে হুমায়ন কবীর ওই বাসাতে বসেই হত্যার পরিকল্পনা করেন।সেমতে ২০২০ সালের ২৭ মার্চ দিবাগত রাতে দুধের সাথে বিষ মিশিয়ে হত্যা করে স্বামী আসাদুজ্জামানকে। হত্যার পরপরই মিথ্যা নাটক সাজাই স্ত্রী লোপা। স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে প্রচার করেন লোপা।
পরে পরিবারের লোকজন তার মরদেহ উদ্ধার করে গাংনী উপজেলার চাঁদামারী গ্রামের দাফন সমপন্ন করেন।
কিছুদিন যেতে না যেতেই লোপা ও তার পরোকীয়া প্রেমিক হুমায়ন কবীর বিয়ে করে ফেলেন। এই সময়ের মধ্যে নিহত আসাদুজ্জামানের পরিবারের লোকজনের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পরে লোপার বড় মেয়ে তাবাচ্ছুম তার মা লোপা ও পরোকীয়া প্রেমিক হুমায়ন কবীরের কিছু কল রেকর্ড ভিডিও কল উদ্ধার করে। এরপর আসাদুজ্জামানের ভাই লিটন হোসেন বাদী হয়ে স্ত্রী লোপা ও তার পরোকীয়া প্রেমিক হুমায়ন কবীরকে আসামী করে ২০২১ সালের ৩ মার্চ চুয়াডাঙ্গা আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২১, তারিখ ০৩/১২/২০২১ ইং।
পরে আদালতের নির্দেশে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পিলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের ভাড়া বাসা থেকে হুমায়ন কবীরকে আটক করে। পরে সে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতের বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
পরে আদালতের নির্দেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদাত হোসেনের উপস্থিতে সদর থানা পুলিশের একটি টীম কবর খেকে বেলা ১১ টার দিকে মরদেহ উত্তোলন করেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার তদন্ত অফিসার (ওসি তদন্ত) আবু সাইদ জানান, ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতে মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। মরদেহ ডিএনএ করে পরবর্তি আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ মামলায় একজন আটক আছে। তবে তার স্ত্রীকেও আটক করা হবে।