মেহেরপুরের গাংনীতে প্রতিবন্ধী,বয়স্ক ও বিধবাদের ভাতা কার্ড করে দেয়ার কথা বলে গাংনীর বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার টাকা নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। সমাজ সেবা অফিস থেকে ভাতার টাকা গ্রহনের কথা বলে ভুক্তভোগীতের হাতে একটি নীল রংয়ের মানি রিসিপ্ট দিয়েছে প্রতারকচক্রটি।
প্রতারক চক্রের দেয়া মানি রিসিপ্ট নিয়ে সোমবার সকালে গাংনী উপজেলা সমাজ সেবা অফিস থেকে বেশ কয়েকজন টাকা নিতে আসলে প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হয়।
জানাগেছে, ‘বিদেশী সংস্থা সৌদিআরব অনুদানের তালিকা’ নামক একটি নীল রংয়ের ফরম যার রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার ২০৮৬৫১, পুরুনের মাধ্যমে গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের কসবা গ্রামের রুমিয়া খাতুন নামের এক বৃদ্ধার কাছ থেকে নিয়েছে ৬ হাজার টাকা।
রাইপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে আমিনা খাতুনের বিধবা ভাতা এক কালীণ মোটা অংকের টাকা পাইয়ে দেবার কথা বলে নগদ নিয়েছে ৩ হাজার টাকা এবং ০১৭৪১৪৭৮১৮৮ নাম্বারে বিকাশ নিয়েছে ২ হাজার টাকা, ছাতিয়ান গ্রামের ওমর আলীর ছেলে শাহিনের প্রতিবন্ধী কার্ডের মাধ্যমে এককালীণ মোটা টাকা পাইয়ে দেবার কথা বলে নিয়েছে ৫ হাজার টাকা। এভাবে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রতারক চক্রটি অসহায় মানুষকে ধোকা দিয়ে হাজার হাজার টাকা নিয়ে অত্নগোপন করেছে। টাকা দেয়া ব্যাক্তিরা সোমবার সকালে গাংনী উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে একটি নীল রংয়ের মানি রিসিপ্ট(রশিদ) নিয়ে টাকা নিতে আসেন।
টাকা নিতে আসা বৃদ্ধা রুমিয়া জানান, তিনজন লোক শুক্রবার সকালে গাংনী উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের কর্মচারী পরিচয়ে আমাদের বাড়িতে যায়। আমাদের ভাতা কার্ড এর মাধ্যমে এককালীণ ২৫ হাজার টাকা পাইয়ে দেবে । যারা আমাদের সদস্যভুক্ত হবে শুধুমাত্র তারাই টাকা পাবে বলে জানালে আমি ধার দেনা করে ৬ হাজার টাকা দিই। আজ সোমবার সকালে সমাজ সেবা অফিসে টাকা নিতে এসে শুনছি এসব ভুয়া কথা।
প্রতারণার শিকার আমিনা খাতুন জানান,একটি নীল রংয়ের ফরম নিয়ে আমাদের বাড়িতে দুইজন লোক যান। তারা গাংনী সমাজ সেবা অফিসের পরিচয়ে বলে সরকার আপনাকে ৩০ হাজার টাকা দিয়েছে।উক্ত টাকা তুলতে হলে ৬ হাজার টাকা জমা দিতে হবে, আজকে না দিলে ওই টাকা পাওয়া যাবেনা। আমি আমার এক প্রতিবেশির কাছ থেকে ধার করে উক্ত টাকা পরিশোধ করি। তারা আমার হাতে একটি কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বলেন এই কাগজটি নিয়ে গাংনী উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে গেলে টাকা পাবেন। তাই আমি টাকা নিতে এসে শুনছি এসব প্রতারণা।
এমন তথ্য জানালেন ছাতিয়ান গ্রামের প্রতিবন্ধী শাহিনের পিতা ওমর আলী। এভাবে একটি সংগবদ্ধ প্রতারক চত্র গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে টাকা তুলে আত্নগোপন করেছে। টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন এমন অনেকেই লজ্জায় মুখ খুলছেন না।
একে একে সমাজ সেবা অফিসে এসে টাকার কথা বলে বিব্রত হয়ে পড়েন সমাজ সেবা কর্মকর্তা।
গাংনী উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা আরশাদ আলী জানান, গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একটি প্রতারক চক্র মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলার জন্য মাঠে নেমেছে। অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়ে টাকা হারিয়েছেন এমন সংবাদ শুনেছি। অনেকেই আমাদের দপ্তরের নাম ভাঙ্গাচ্ছেন। জনগন সচেতন হলে এসব প্রতারণার শিকার হবেনা। কাউকে টাকা পয়সা দিয়ে প্রতারিত হবেন না। কোন ব্যাক্তি আমাদের নাম করে গ্রামে গেলে সাথে সাথে তাদের আটক করে পুলিশে দেয়ার অনুরোধ করেন।