গাংনীর তেতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের করমদি গ্রামের স্থানীয় মাস্তান উজ্জল হোসেন নামক এক যুবকের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধীর ভাতার টাকায় ভাগ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
কথিত মাস্তান উজ্জ্বল উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের ইদু সেখের ছেলে । উজ্জল হোসেন নিজেকে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিচয় দিয়ে গ্রামের অসহায় দুস্থ বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী পরিবারের সদস্যদের সাথে প্রভাব বিস্তার করে কার্ডপ্রতি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবার জানিয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের মেম্বর না হয়েও নিজেকে বড় মাপের নেতা পরিচয় দিয়ে উজ্জল হোসেন করমদি পশ্চিমপাড়া গ্রামের অসহায় প্রতিবন্ধী রফাত আলীর মেয়ে বাক প্রতিবন্ধী মিম্মা খাতুন, আশরাফুলের ছেলে ইউসুফ পাগলা এনামুলের ছেলে প্রতিবন্ধী হাবু’ র প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেবার নামে বিভিন্ন সময় তাদের চাপ দিয়ে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করেছে।
সম্প্রতি (গত ২৬ আগষ্ট,২০২০) তারিখে জনতা ব্যাংক বামন্দী শাখা থেকে বকেয়া জনপ্রতি ৯ হাজার টাকা প্রতিবন্ধী ভাতা উত্তোলন করে। ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে রাস্তায় নেমে আসলেই সুযোগ সন্ধানী উজ্জল হোসেন তাদের নিকট থেকে টাকা গুনে দেয়ার নাম করে কেড়ে নিয়ে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা পকেটস্থ করে।
এসময় প্রতিবন্ধীরা প্রতিবাদ করলে তাদেরকে উজ্জল ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেন টাকা না দিলে কার্ড বাতিল করে দেয়া হবে। কার্ড বাতিলের ভয়ে অনেকেই সাংবাদিকদের সামনে অভিযোগ করতে সাহস পাইনি। তবে গোপন সূত্রে জানা গেছে, এই চাঁদাবাজ উজ্জল হোসেন তার এলাকার সকল ভাতা ভোগীদের নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এসব বিষয়ের সত্যতা জানতে সরেজমিনে গেলে প্রতিবন্ধী মিম্মা খাতুনের মা রেহেনা খাতুন ও বাবা প্রতিবন্ধী রফাত সেখ জানান, গত বুধবার ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে বাড়ি আসার সময় উজ্জল আমার মেয়ের হাত থেকে টাকা কেড়ে নিয়ে ৩ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। এমনিভাবে অনেকের নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। একই কথা জানালেন প্রতিবন্ধী ইউসুফের মা সালেহা খাতুন।
এবিযয়ে অভিযুক্ত উজ্জল হোসেনের সাথে কথা বলা হলে প্রথমত তিনি টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে। পরে তিনি বরেণ, আমি কি মেম্বর না চেয়ারম্যান যে, প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিয়েছি।
আমি ওদের কাউকে চিনিনা ও জানিনা, পরে বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা পত্রিকায় লেখালেখি করবে এমন কথায় উজ্জল হোসেন নিজেকে নিদোর্ষ প্রমান করতে প্রতিবন্ধী মিম্মার মায়ের হাতে গোপনে ৮ হাজার টাকা ফেরত দেয়।
তবে এলাকাবাসীর দাবি , শুধু একজনের টাকা ফেরত দিলে হবে না। সকলের টাকা ফেরত দিতে হবে। নইলে পুলিশ প্রশাসনের কাছে তাদের আবেদন, এই ধান্দাবাজ উজ্জলকে অবিলম্বে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য স্থানীয়দের।
এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়াম্যান জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে আলাপ কালে তিনি জানান, আমি বিষয়টি শুনেছি।গতকাল উজ্জল হোসেন, তার বাবা ও মা আমার কাছে এসে ক্ষমা প্রাথনা করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সে সমুদয় টাকা ফেরত ও দেবে।
নইলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যব্স্থা নিতে উপজেলা নিবার্হী অফিসারকে অবহিত করবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা নিবার্হীঅফিসার আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ বলেন, যারা এই সব ব্যাপারে অভিযুক্ত। তাদের নাম সনাক্ত করে সংবাদ প্রকাশিত হলে আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা দেয়া হবে।