গাংনীর ভাটপাড়ায় ফর্ম পূরন করার দাবিতে মানব বন্ধন করেছে বিএন কলেজের এইচ এসসি পরিক্ষার্থীরা।
শনিবার দুপুরে বিএন কলেজের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধনে কলেজের প্রায় শতাধিক পরিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বিএন কলেজের ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থী আব্দুল হাকিম বলেন, ৩০ আগস্ট তারিখ ফরম পূরণের শেষ সময় সীমা। সামনে মাত্র দু’টি দিন রয়েছে। পরীক্ষার্থীরা ফরম পূরণ করতে পারে নাই। বিএন কলেজের অধ্যক্ষ আ.ফ.ম. আলিমুজ্জামান বিভিন্ন খাতে দুর্নীতি করে বর্তমানে সাময়িকভাবে বরখাস্ত রয়েছেন। তিনি ইআইআইএন—১১৮২৫৪ এর পাসওয়ার্ড না দেওয়ায় এ জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে এবং পরীক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার ঝুঁকিতে পড়েছে। এর থেকে পরিত্রাণ চান তারা।
শিক্ষার্থী শারমিন সুলতানা ও মুন্নি খাতুন জানান, আমাদের সাথে কোন দিনও অধ্যাক্ষ স্যার ভালো ব্যাবহার করেননি এবং আমাদের উপবৃত্তির টাকা পর্যন্ত তিনি আত্নসাৎ করেছেন। তিনি নিয়মিত কলেজে আসতেন না। কিন্তু যেদিন আসতেন সকলের সাথে খারাপ আচরন করতেন। আমারা সেই শিক্ষকের কাছে কি শিক্ষা অর্জন করতে পারবো তা আমাদের জানা নাই।তবে আমাদের এত কিছুর পরেও কোন আপত্তি ছিলনা যদি না সে আমাদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি না খেলতো, সে আমাদের জীবন শেষ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে কিন্তু আমরা এখন নিরুপায় এর সঠিক বিচার চাই।
অভিভাবকদের মধ্য থেকে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম জানান, সন্তানদের ভবিষ্যৎ যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে বরখাস্তে থাকা অধ্যক্ষ আ.ফ.ম আলিমুজ্জামানকে পাসওয়ার্ড দিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। অন্যথায় তার কারণে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হলে তাকেও আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে বাধ্য করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। একই কথা জানিয়েছেন উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের আব্দুল আজিজ ও ভাটপাড়া (কুঠি) গ্রামের মজনুর রহমান।
মানববন্ধনে সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইজারুল ইসলাম বলেন, অধ্যক্ষ আ.ফ.ম আলিমুজ্জামান দুর্নীতি করে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির ৪০ হাজার ৫শত টাকা, শিক্ষক— কর্মচারীদের নিকট থেকে ৫ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা ও কলেজের আয়কৃত ১ লক্ষ্য ৪১ হাজার ৪৭০ টাকাসহ সর্বমোট — ৭ লক্ষ ৬৫ হাজার ৯ শত ৭০ টাকা হাতিয়ে নেয়। এ বিষয়ে বর্তমান কলেজ কর্তৃপক্ষ যশোর বোর্ডের আরবিট্রেশন বোর্ডে ০৫/০১/২০২১ ইং তারিখে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন যার আইডি নং—৪২৪৬।
তিনি বলেন, সেই সাথে মেহেরপুর বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে যার নং— সিআর—১২৬/২০২১ তারিখ ২৮/০৩/২০২১ ইং। তাছাড়া অধ্যক্ষ আ.ফ.ম আলিমুজ্জামান এর নিয়োগের রেজুলেশনে বহিতে ভিন্ন ভিন্ন রেজুলেশন দেখা গেছে। সে বিষয়েও জটিলতা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন এ জটিলতা থেকে পরিত্রান পেতে ১৮/০৭/২০২১ ইং তারিখে যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অ্যাড্রেস করে— মেহেরপুর জেলা প্রশাসক, গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও সভাপতি বরাবরে অনুলিপি প্রেরণ করা হয়েছে। ২৯/০৭/২০২১ ইং তারিখে কলেজ পরিদর্শক বরাবরে পুনরায় একটি পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। অতঃপর ১৭/০৮/২০২১ ইং তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা সচিব, যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যান, খুলনা বিভাগের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক ও যশোর বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক বরাবরে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহবুব উল আলম আরো বলেন, অধ্যক্ষ আ.ফ.ম আলিমুজ্জামানকে যাতে চূড়ান্ত বরখাস্ত না করা য় সে জন্য চলতি মাসের ৩০ তারিখ এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের শেষ সময়সীমা থাকলেও (ইআইআইএন—১১৮২৫৪) এর পাসওয়ার্ড ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহবুব উল আলমকে না দিয়ে জটিলতার সৃষ্টি করেছেন। ফলে শতাধিক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চতার ঝুঁকিতে পড়েছে। এর থেকে পরিত্রাণ চান শিক্ষার্থী— অভিভাবক ও শিক্ষক মন্ডলী। অন্যথায় অধ্যক্ষ আ.ফ.ম আলিমুজ্জামান এর বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলাসহ ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।