চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর মনোহরপুর আমতলা ফসলী মাঠে বৈশাখী মেলার নামে চলছে জুয়ার আসর। প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে এ জুয়ার আসর বসানো হলেও সবাই রয়েছেন নির্বিকার। জুয়ার আসরের খবরই জানে না উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন। ফসলী জমিতে বৈশাখী মেলার নামে এ জুয়ার আসর চলছে।
জানা গেছে, প্রতিবছর একটি সিন্ডিকেট বৈশাখী মেলার নামে যাত্রা সার্কাসের আড়ালে উলঙ্গ নৃত্য গভীর রাতে মাদক বিকিনিকি জুয়ার বোর্ড র্যাফেল ড্র নামে চলছে রমরমা জুয়ার আসর।
২৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে এ মেলার আনুষ্ঠানিকতা প্রশাসনের নাকের ডোগায় প্রকাশ্য র্যাফেল ড্র টিকিট বিক্রি চলছে মাইকিং করে থানা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সামনে। প্রতিদিন খুব সকাল থেকে রাত ১০ টা অবদি প্রায় ১০০ মতো ভ্যান, ইজিবাইকে করে উচ্চ স্বরে মাইক বাজিয়ে বড়ো অংকের পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে রেফাল ড্র নামে জুয়ার টিকিট বিক্রি চলছে উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডোগায়। মনোহরপুর মাঝের পাড়া আবাসন জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান খাঁন বলেন সিরু, মোস্ত, সেন্টু সহ একটি সিন্ডিকেট প্রতি বছর বিভন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে কোন সময় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কোন সময় নাম সর্বস্ব ক্লাবের নামে বৈশাখী মেলার নামে এ জুয়ার আসর করে থাকেন, এ সিন্ডিকেটের খুঁটির জোর কোথায়? এলাকায় চুরি, ডাকাতি বেড়ে যায় এ জুয়ার আসর বসার সাথে সাথে।
মনোহরপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আনিছুর রহমান শিমুল মল্লিক বলেন মেলার নামে এ জুয়া ও উলঙ্গ নৃত্য শুরু হওয়ার দিনই মনোহরপুর বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের দান বাক্স সহ বেশ কয়েক টিওবয়েল চুরি হয়েছে। এলাকার মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে গেছে যে কোন সময় ঘটতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা।
সরজমিনে দেখা গেছে, মেলা মাঠের পশ্চিম পাশে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের স্টল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও দক্ষিণ পাশের অংশে মাঠের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছে জুয়ার আসর। রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে এ মেলার সব আয়োজন বন্ধ করার কথা থাকলেও শুধু জমজমাট জুয়ার আসর টিকিয়ে রাখতে গভীর রাত পর্যন্ত চলে জুয়ার রমরমা বাণিজ্য। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছে এ জুয়ার আসরে। প্রতিটি জুয়ার বোর্ডে প্রতি রাতে হাজার হাজার টাকার জুয়াখেলা হচ্ছে।
স্থানীয় উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই প্রতিদিন উপজেলা শহরের ব্যস্ততম এলাকা মনোহরপুর আমতলা মাঠে প্রকাশ্যে এ জুয়ার বোর্ড চালানো হচ্ছে। প্রতিদিন উপজেলা প্রশাসন কে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রফাদফা করে এ জুয়ার আসর চালাচ্ছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী গ্রুপ। অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিনি বলেন বৈশাখীর মেলার অনুমোদন আছে তবে জুয়া বা র্যাফেল ড্র অনুমোদন দেওয়া হয়নি আপনি বলেছেন এখনি ব্যবস্হা নেব।
জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন মেলার নামে কোন প্রকার জুয়া বা অশ্লীলতা মেনে নেওয়া হবে না আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিচ্ছি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। ১৫টি জায়গায় কাপড় টানিয়ে বসানো হয়েছে এ জুয়ার আসর। আর এসব জুয়ার বোর্ড থেকে নির্দিষ্ট অংকের টাকা তুলছেন নিজেই। কথা হয় মেলা আয়োজক কমিটির অন্যতম সিরু ওরফে জুয়া সিরুর সাথে তিনি দম্ভের সাথে বলেন জুয়া জুয়া না, এটাও বৈশাখী মেলার একটা অংশ আমরা প্রশাসন কে ম্যানেজ করে এসব করছি লেখা লেখি করে কোন কিছুই হবে না।এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বিভাগীয় কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসী।