ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বড়বাড়ি গ্রামের মোশারেফ মন্ডলের ছেলে শিমুল মন্ডল সুদে টাকা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। ছয় লাখ টাকা সুদে কারবারী ইসরাইলকে দিলেও মুক্তি মেলেনি আজো। অথচ তার কাছ থেকে সুদ নেয়া ছিলো মাত্র পঞ্চাশ হাজার টাকা। আবারও টাকা দাবি করে মামলা করেছেন আদালতে।
জানা যায়, সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের বড়বাড়ি গ্রামের আমজেদ আলী মন্ডলের ছেলে ইসরাইলের কাছ থেকে চাষাবাদের জন্য বিগত ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল ৫০ হাজার টাকা সুদ হিসেবে নেন শিমুল মন্ডল। কিন্তু সেই টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে হারিয়েছেন স্বর্বস্ব। প্রতিমাসে সাড়ে ১২ হাজার টাকা মৌখিক চুক্তি থাকলেও আর্থিক টানাপোড়েনের কারণে নিয়মিত তা পরিশোধ করতে পারেননি শিমুল। এরপর সুদে কারবারি মিমাংশা জন্য চাপ দিতে থাকে শিমুল মন্ডলকে। পরে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাবি করে সুদে কারবারি ইসরাইল। উপায়ন্ত না পেয়ে বসতভিটা বিক্রি করে সুদে কারবারীর হাতে ৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা তুলে দেন শিমুল। পরবর্তিতে আরও ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দাবি করেন সুদে কারবারি। সেই দাবী পূরণ না হওয়ায় ভূয়া স্ট্যাম্পে ইসরাইলের মা ওজলা খাতুনকে বাদি করে ৫ লাখ টাকা কর্জ দিয়েছেন দাবি করে ঝিনাইদহ আদালতে মামলা করেছে সুদে কারবারি। সেই মামলায় সাক্ষী হিসেবে নাম দেওয়া হয়েছে সুদে কারবারি ইসরাইল, তার বাবা, স্ত্রীকে।
ভ’ক্তভোগী শিমুল মন্ডলের পিতা মোশারেফ মন্ডল জানান, ‘৫০ হাজার টাকা নিয়ে এ পর্যন্ত ৬ লাখ টাকার উপরে সুদে কারবারি ইসরাইলকে দিয়েছি। বসতভিটা বিক্রি করে টাকা দিয়েও মুক্তি মেলেনি। জমিজমা টাকা পয়সা হারিয়ে একেবারে পথে বসে গেছি।
আমার নিকটতম পতিবেশি ইলাজ মিয়াকে দিয়ে সুদে কারবারি ইসরাইল আমার ও আমার পরিবারকে শারীরিক, মানষিক নির্যাতন সহ সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন করছে। এমনকি বিগত ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর আমার ছেলে রিপুল মন্ডলের উপর হামলা করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর মিথ্যা গল্প সাজিয়ে ইলাজ মিয়া আমাদের নামে ঝিনাইদহ সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করে। সেই অভিযোগকে কেন্দ্র করে আমাকে এবং আমার ছোট ভাই বাবলুকে থানায় মিমাংশার কথা বলে আটক করার পরদিন আদালতে চালান করে এবং আমার ছেলে শিমুলকেও আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এতকিছুর পরও বিভিন্ন ভাবে আমার ও আমার পরিবারকে প্রাণনাশের ভয় দেখানো হচ্ছে। আমরা সুদে কারবারি ইসরাইলের হাত থেকে মুক্তি চাই।
এবিষয়ে সুদে কারবারি ইসরাইল জানান, আমি ৫০ হাজার টাকা দিয়নি এ পর্যন্ত ৬ লাখ টাকার উপরে সুদে টাকা নিয়নি বলে অস্বিকার করেন। এছাড়াও আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। শিমুল মন্ডলের সাথে আমার কোনদিন কোন লেনদেন হয়নি। অন্যদিকে আদালতে মামলা করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি আদালতে মামলা করেছি। সত্য মিথ্যা সব প্রমাণ হয়ে যাবে আদালতেই।