ঝিনাইদহে সরকারি কেসি কলেজের একাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী আনিকা আশরাফ প্রমি অপহরণ মামলার প্রধান আসামী ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সাবেক নেতা আবুজার গিফারী গাফফারকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সেই সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে ভিকটিম। সোমবার ভোরে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার তথ্যের ভিত্তিত্বে র্যাব-৪ ও র্যাব-৬ যৌথভাবে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে তাদের গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে এসিড সাদৃশ্য বস্তু ও তিনটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন-ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বড়দাহ গ্রামের দিয়ানত আলী বিশ্বাসের ছেলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবুজার গিফারী গাফফার (৩৫), রাজবাড়ি সদর উপজেলার সাজ্জাদ হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন (২২) ও একই এলাকার আবুল হোসেন প্রমানিকের ছেলে হাফিজুর রহমান (৪৬)। গ্রেফতারের পর তারা এই অপহরণের সঙ্গে জড়িত মর্মে স্বীকার করেছে।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম ইমরান খান গনমাধ্যমকর্মীদের জানান, র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল গাফফার তাদের জানিয়েছেন, প্রমি এসএসসিতে ভাল রেজাল্ট করে কলেজে গেলে তার হাতছাড়া হয়েছে যাবে এমন ধারণা থেকে তাকে অপহরণ করার ছক আঁটে।
ঘটনার দুই দিন আগে ঝিনাইদহ কোর্ট এলাকায় এ নিয়ে তার সহযোগীদের সঙ্গে পরিকল্পনা বৈঠক করে গাফফার। কিভাবে প্রমিকে অপহরণ করা হবে তাও ঠিক করা হয়। গত ৫ মার্চ প্রমি কোচিং সেন্টার থেকে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফিরছিল।
ঝিনাইদহ শহরের নিউ একাডেমি স্কুলের সামনে পৌঁছালে আগে থেকে সেখানে ওৎ পেতে থাকা আবুজার গিফারী গাফফারসহ তার সহযোগীরা প্রমিকে জোরর্পূবক একটি মাইক্রোবাসে তুলে প্রথমে রাজবাড়ি নিয়ে যায়।
র্যাব জানায় রাজবাড়িতে গাফফার তার আগের দুই সহযোগী পরিবর্তন করে নতুন দুই সহযোগী সঙ্গে নিয়ে প্রমিকে ঢাকায় নিয়ে আসে। ঢাকায় সুবিধামতো আশ্রয় না পেয়ে দ্রুত সিলেটের দিকে রওনা হয় গাফফার।
সিলেট থেকে প্রমিকে নিয়ে আবারো ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় অপহারণকারী চক্র। পথের মধ্যে ভিকটিম প্রমিকে এসিড ও ছুরি দেখিয়ে চিৎকার চেচামেচি না করতে বলেন আবুজার গিফারী গাফফার।
তাদের বহনকৃত মাইক্রোবাসটি মানিকগঞ্জে পৌছালে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিত্বে র্যাব-৪ ও র্যাব-৬ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
শৈলকূপা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শামিম মোল্লা জানান, আবুজার গিফারী গাফফারকে নারী কেলেংকারী ও দলীয় নেতাকর্মীদের কাছ থেকে চাকরী দেওয়ার নাম করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা নেওয়ার দায়ে বহু আগেই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সে আর যুবলীগের কোন কর্মী নয়।
তিনি বলেন, গাফফার ইসলামী ভার্সিটিতে পড়ার সময় হত্যা মামলার আসামী হলে ছাত্রলীগ থেকে ৫ বছর সাসপেন্ড ছিল।