ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। জেলা শহরে একাধিক স্থানে মিলেছে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার উপস্থিতি। এ অবস্থায় জেলা জুড়ে ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ছোটবড় সব বয়সী মানুষই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন।
আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে ১১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করছেন। তারা বলেন, হাসপাতালের ফ্যান নষ্ট, হাসপাতালে সবসময় প্যাথলজিস্ট না থাকায় দ্বিগুন টাকা খরচ করে বাহির থেকে রিপোর্ট করাতে হচ্ছে, মশাড়ি ছেড়া সেইসাথে টাঙ্গানোর ব্যবস্থাও নেই।
চিকিৎসাধীন জেসমিন আরা জানান, আমি বাড়ি থেকে আক্রান্ত হয়েছি। তিনদিন ধরে হাসপাতালে আছি কিন্তু মশারি টাঙ্গাতে পারছি না।
শৈলকূপা থেকে আসা ডেঙ্গু রোগী শিহাবের স্বজন অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের পরিবেশ অপরিচ্ছন্ন, ফ্যান নষ্ট। হাসপাতালে সবসময় প্যাথলজিস্ট না থাকায় দ্বিগুন টাকা খরচ করে বাহির থেকে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। যা আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, শৈলকূপায় ৩ জন, কালীগঞ্জে ৩ জন, হরিণাকুুণ্ডে ১জন, কোটচাঁদপুর ২জন, মহেশপুরে ২জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম জানান, গত সপ্তাহে এখানে ৪০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১১ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালে যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই ঢাকায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে জেলার বিভিন্ন এলাকাতেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ডেঙ্গু রোগীদেরকে বিশেষায়িত কক্ষে মশারির নিচে রাখা হয়েছে। সার্বক্ষণিক চিকিৎসক ও নার্সের তত্ত্বাবধানে তারা সেবা পাচ্ছেন।
ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা: শুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, ডেঙ্গুর লক্ষণে এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে। তাই সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আগে সবাই বলতো এডিস মশা দিনে দংশন করে। এটা ঠিক নয়। এই মশা এখন দিন-রাতে সব সময়ই দংশন করে। তাই বাসাবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি মশা যেন কামড়াতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। বাসার বারান্দায় রাখা গাছের টব, প্লাস্টিকের ব্যাগ, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা, প্লাস্টিকের বোতল, গাড়ির পরিত্যক্ত টায়ারে পানি জমে থাকতে দেয়া যাবে না। জেলায় আশঙ্কাজনকহারে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অন্তত সামনের দুইমাস সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।