ঝিনাইদহে সন্ধানী লাইফ ইন্সুরেন্সের প্রতারণার ফাঁদে পড়েছে সবুজ আলী নামে এক কর্মী। তিনি এখন সহায় সম্বল বিক্রি করেও দায় মেটাতে পারছে না বলে জানা গেছে।
সবুজের পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে ঝিনাইদহ জামতলা সড়কের বাসিন্দা মোটর শ্রমিক মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র সবুজ মিয়া, অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান। দুবেলা খেয়েপরে বেঁচে থাকতে সবুজ মিয়া ঝিনাইদহ সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে কম্পিউটার অপারেটর পদে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ২ তারিখে চাকুরী নেয়। কয়েক মাস সফলতার সাথে চাকুরী করার পরে ঝিনাইদহ শাখার উন্নয়ন অফিসার রাজু আহম্মেদ নামে এক ব্যক্তির প্রলোভনে পড়ে মৌখিক ভাবে অফিসের হিসাব রক্ষকের দায়িত্ব নেয়। এই হিসাব রক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার সাথে সাথে তার নিকট থেকে জামানত হিসেবে ঝিনাইদহ ইসলামী ব্যাংকের ২০৫০১৭৫০২০৩১৯১৪০০ হিসাব নম্বরের একটি ফাঁকা চেক, যার নং গঝঝ ঘঙ-২১২৮৩২২ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি গচ্ছিত রাখে।
সূত্র আরও জানায় বিভিন্ন অযুহাতে ২০১৯ সালের প্রথম দিকে সবুজকে ইন্স্যুরেন্সের চাকুরী ছাড়তে বাধ্য করে। তখন সমস্ত দায় দেনা মিটিয়ে সবুজ চলে আসে। তবে কৌশলে হেড অফিসে জমা আছে বলে তার জামানতের চেকটি রেখে দেওয়া হয় আর বলা হয় পরবর্তিতে ফেরত দেওয়া হবে।
এই অবস্থায় জামানতের চেকটি ফেরত না দিয়ে ২০১৯ সালের ২৪জুন সন্ধানী লাইফের পক্ষে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের এ্যাড. মোঃ খলিলুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি লিগ্যাল নোটিশ সবুজ কে দেওয়া হয়। তখন এই দরিদ্র পরিবারের মাথার উপর আকাশ ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। বিষয়টি শুরাহার জন্য ভুক্তভোগী সবুজ ও তার পরিবার মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকে। লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা হয়, সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের হোড অফিস, সন্ধানী লাইফ টাওয়ার, রাজউক প্লট নং- ৩৪, বাংলামটর , ঢাকা গিয়ে সবুজ মিয়া কোম্পানির পাওনা টাকা পরিশোধ বাবদ ৬লাখ ২১হাজার ৪৫০ টাকার একটি প্রদান করেন যা একই সালের জুন মাসের ১৬তারিখে ঝিনাইদহ শাখা হতে ডিজঅনার পূর্বক ফেরত দেওয়া হয়।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী সবুজ মিয়া বলেন আমি অফিসে দায়িত্বে থাকা কালীন (২০১৮ থেকে ২০১৯) সময়ে গ্রাহকের সমস্ত টাকা উন্নয়ন অফিসার রাজু আহম্মেদের বেসিক ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখার ৬৭১৪০১০০০০০৮১ নং জমা দিতাম, তার একাধিক জমা রশিদ ও হিসাব বিবরণীতে প্রমান রয়েছে এই রাজুর দায় আমার ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন এটা আমার জন্য একটা প্রতারনার ফাঁদ, আমি অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান টাকা দেওয়ার সাধ্য আমার নেয়, আমি এই প্রতারণার হাত থেকে মুক্তি চায়।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কর্মকর্তা রাজু আহম্মেদ বলেন সবুজ মিয়া সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে কম্পিউটার কাম হিসাব রক্ষকের চাকুরী করতেন। এ সময়ে গ্রাহকের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাত করায় কোম্পানী তার নামে মামলা করেছে এর মধ্যে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেয়। তিনি আরও বলেন আমার হিসাবে যা জমা দিয়েছে তা কমিশনের টাকা।
রাজু আহম্মেদের এই বক্তব্য অসংগতিপূর্ণ বলে মনে হয়েছে কারন, ১৫ অক্টোবর ২০১৮ থেকে ৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ সাল পযর্ন্ত মাত্র পাঁচ মাসে ২১লাখ ৭৫ হাজারেরও বেশী টাকা ব্যক্তিগত কমিশন হিসেবে ব্যাংকে জমা অস্বাভাবিক বলে মনে হয়েছে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীর বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।