সংক্রমণের ঝুঁকি সত্ত্বেও ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ঠেকানোর যুদ্ধে সামনে থেকে লড়াই করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। মহা এইসংকটে পিছিয়ে নেই ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর মডেল থানা পুলিশও। করোনা যুদ্ধে মাঠে কাজ করছেন থানা পুলিশের প্রায় ৮০ জন যোদ্ধা। স্থানীয় পর্যায়ে যার নের্তৃত্ব দিচ্ছেন থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুল আলম। করোনার সংক্রামণ মোকাবিলায় সম্মুখ যোদ্ধা হিসাবে চিকৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের মতোই ভূমিকা পালন করছেন পুলিশ সদস্যরা।
রাত-দিন এক করে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ। ঝুঁকিতে জীবন, তারপরও সেবা দিচ্ছেন উপজেলার প্রায় দুই লক্ষাধীক নাগরীকদের। এরই মধ্যে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২ চিকৎসক ও ১ নার্সসহ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬ জন। জনসচেতনতা ও সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখতে মাঠ পর্যায়ে অবস্থান নেওয়া পুলিশ সদস্যরা করোনা ঝুঁকি মাথায় নিয়েই কাজ করে চলেছেন।
কোটচাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুল আলম এই প্রতিবেদককে জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকের চেয়ে চাপ অনেক বেশি। সেই সাথে রয়েছে জীবনের ঝুঁকি। তারপরও জেলা পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামানের নির্দেশনায় ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কোটচাঁদপুর সার্কেল) মোঃ মোহাইমিনুল ইসলামের সহযোগিতায় থানা ও ফাঁড়ির ২৫জন অফিসার এবং ৫২ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে চলমান এই সঙ্কট মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছে।
একদিকে করোনা যুদ্ধে ফ্রন্ট লাইনে থেকে করোনা মোকাবিলা, অন্যদিকে উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা,অপরাধ দমন, অপরাধীদের গ্রেফতার এবং মামলা নেয়ার মতো নিয়মিত কাজও চলছে পুলিশের। থানা ও ফাঁড়ি পুলিশের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে শুরু থেকেই যুক্ত রয়েছে জেলা পুলিশের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা। যে কোন পরিস্থিতির বিষয়ে তারা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। করোনা মোকাবিলায় প্রশিক্ষন ছাড়াই করোনাযুদ্ধে মাঠে নেমেছে কোটচাঁদপুর থানা পুলিশ।
মূলত প্রধান দায়িত্ব হলো সংক্রামণ ঠেকাতে গণজমায়েতে বাধা ও সামাজিক দূরুত্ব নিশ্চিত করা। এছাড়াও উপজেলার প্রবেশ পথগুলোতে চেকপোষ্টে চলাচল নিয়ন্ত্রণ, উপজেলা প্রশাসন দ্বারা গঠিত পৌরসভা ও ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ে করোনা কমিটিকে সহযোগিতা করছে পুলিশ। সংক্রামণ ঝুঁকি নিয়ে যারা কোয়ারেন্টাইনে আছেন পুলিশ তাদেরও দেখভাল করছে। সেই সাথে প্রত্যন্ত এলাকার করোনাদূর্গত মানুষের ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে খাবার।
মাহবুবুল আলম জানান, পুলিশ সদস্যদের মাঝে করোন সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। সিনিয়র কর্মকর্তরা নিয়মিত মাঠপর্যায়ের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন। পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের মধ্যে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, এবং হ্যান্ড স্যানেটাইজার সহ বিভিন্ন নিরাপত্তা সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, থানা ভবন ও এর আশ-পাশে পর্যাপ্ত জীবাণুনাষক ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যারাকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে বেড স্থাপন করা হয়েছে। যাতে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাফেরা ও অবস্থান করতে পারেন পুলিশ সদস্যরা। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে তাদের পুষ্ঠিমান সমৃদ্ধ উন্নমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের পরিবারকেও সুরক্ষিত রাখতে নানা পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সংক্রামণ মোকাবিলায় সবাইকে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান পুলিশের এই কর্মকর্তার।