ঢাকার উত্তরায় ক্রেন-গার্ডার দুর্ঘটনায় নিহত আইয়ুব আলী ওরফে রুবেল হোসেনের বাড়ি মেহেরপুর সদর উপজেলার বারাদি ইউনিয়নের রাজনগর গ্রাম বলে দাবি করেছেন তার স্বজনরা। যদিও এলাকায় তাকে চেনেন আয়ূব আলী নামে।
তিনি রাজনগর গ্রামের মৃত তারা চাঁদ আলীর ছেলে। নয় ভাই বোনদের মধ্যে তিনি পিতা মাতার অষ্টম ছেলে।
গতকাল সোমবার ঢাকার উত্তরায় তার ছেলে হৃদয় আলীর বৌভাত শেষে প্রাইভেটকরে ছেলে ও ছেলের বৌকে বাড়ি পৌঁছে দেবার জন্য রওনা দেন তিনি। পথিমধ্যে ক্রেন দুর্ঘটনায় তার মুত্যু হয়।এ ঘটনায় মারাত্মক আহত হয় তার ছেলে হৃদয় আলী। ঘটনাটি শোনার পর থেকেই রাজনগর গ্রামে তার স্বজনদের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সকলেই আছেন লাশের অপেক্ষায়।
নিহতের বড়ভাই মহশিন আলি জানান, ২২ বছর আগে গার্মেন্টেসে চাকুররি জন্য গ্রাম থেকে ঢাকায় চলে যান রুবেল হোসেন। সেখানে দীর্ঘদিন চাকুরির পর বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা শুরু করেন। গেল ১০/১২ দিন আগেও তিনি রাজনগর গ্রামে এসেছিলেন। নয় ভাইবোনের মধ্যে রুবেল হোসেন ছিলেন তার পিতার অষ্টম সন্তান। আজ মঙ্গলবার ভোররাতে পরিবারের কাছে তার মৃত্যুর সংবাদ আসলে মরদেহ আনতে ঢাকায় পৌছেছেন তার ছোট ভাই ইয়াহিয়াসহ কয়েকজন।
রুবেল হাসেনের বোন আদুরি খাতুন জানান, বাড়িতে ছেলের বৌভাত অনুষ্ঠান শেষ করে ছেলের শশুরের পরিবারের লোকজনকে বাড়ি পৌছে দেবার জন্য নিজস্ব প্রাইভেটকার নিয়ে বের হন আমার ছোট ভাই রুবেল হোসেন। সেখানে গার্ডার চাপায় চাপায় শিশুসহ ৫জন নিহত হন। এমন সংসবাদ বিভিন্ন টেলিভিশনে শুনতে পেরে ঢাকায় যোগাযোগ করি। ঢাকা থেকে আমাদের আদরের ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে পেরেছি। ইতোমধ্যে আমার ছোটভাই ইয়াহিয়া মরদেহ আনতে ঢাকায় পৌছে বাড়িতে মোবাইল করে বলেছে মরদেহ হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
রুবেলের ভাতিজি(ভাইয়ের মেয়ে) তানিয়া সুলতানা জানান, আমাদের পুরো পরিবারটি চলতো চাচার রোজগারের ওপর। ঢাকায় ব্যবসা করে আমাদের দেখাশোনা করতেন। গেল রাত ৮টার সময় থেকে আমার চাচার সাথে যোগাযোগ করে পাচ্ছিনা। এমন একটি বড় ধরনের কাজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা না করেই কিভাবে কাজ করছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা এর সুষ্ঠ্য বিচার চাই।
এমন দুর্ঘটনায় ক্ষোভ বিরাজ করছে নিহতদের স্বজনদের পরিবারে। তাদের দাবি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও কর্মরত শ্রমিকদের অবহেলার কারণে এমন দুর্ঘটনায়। আর তাদের ভূলের মাসুলে ঝরে গেল বেশ কয়েকটি তাজা প্রাণ। এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তীর দাবি জানান স্বজনরা।
মেহেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মেজবাহ উদ্দীন আহাম্মেদ বলেন, এসংক্রান্ত কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই। যেখানে ঘটনা সেই থানা থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কোন প্রকার বার্তা পাঠাইনি। বার্তা পেলে নিশ্চিত হতে পারবো।