মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজনগর গ্রামের আশুরা খাতুনের দায়ের করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মফিজকে আদালতে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পনমুলক লিখিত ব্যাখ্যা দাখিলের নির্দেশ, মামলার তদন্ত অফিসার পরিবর্তন করতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ ও অত্র মামলার সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তার উক্তরুপ কার্যকলাপ তদন্তপূর্বক আগামী ১৬/০৭/২০২৩ ইং তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সার্কেলকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মেহেরপুর সদর আমলী আদালতের ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রথম শ্রেনীর ম্যাজিস্ট্রেট মো: তরিকুল ইসলাম।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে মেহেরপুর সদর আমলী আদালতের ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রথম শ্রেনীর ম্যাজেস্ট্রিট মো: তরিকুল ইসলাম এই নির্দেশ দেন।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, মামলার বাদী মোছা: আশুরা খাতুন তার মামলায় উল্লেখ করেছেন, রাজনগর গ্রামের মৃত আদম আলীর ছেলে মুক্তি (৫০) নারী লোভী সন্ত্রাসী ও দলীয় প্রভাবশালী লোক। আসামি ইতোপূর্বে জোরপূর্বক একাধিক নারী ধর্ষণের সময়ে জনগনের নিকট ধরা পড়েছে। আমি তার বিরুদ্ধে ক্যাম্পে ও থানায় একাধিকবার অভিযোগ দায়ের করতে ব্যার্থ হয়েছি।
অবশেষে বিগত ১১/০৬/২৩ তারিখে বিজ্ঞ আদালতে পিটিশন দায়ের করি।বিজ্ঞ আদালত এই পিটিশন আমলে নিয়ে মেহেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়ে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। আসামি দূর্দান্ত, দুধর্ষ ও দলীয় প্রভাবশালী হওয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তা ভয়ভীতির উর্দ্ধে উঠে স্বাক্ষীদের সাথে ও আমার কোনো বক্তব্য যথাযথভাবে শ্রবণ করেনি। এছাড়া আসামি তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে গত ১৭/০৬/২৩ তারিখ সকাল ৯ টার সময় আমার ভাই জামায়াতুল ইসলামের বাড়ি উপস্থিত হয়ে তার গলায় গামছা পেছিয়ে শ্বাসরোধ করে জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।
আসামি মুক্তি আমার আত্মীয় স্বজনকেও নানাভাবে হুমকী ধামকী দিচ্ছে মামলা যাতে আমি উঠিয়ে নিই। আশুরা খাতুন আরও উল্লেখ করেছে ২০১৫ সাল থেকে আমাকে শারীরিক ও মানুষিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছে। তার অত্যাচার নির্যাতনের হাত থেকে বাচতে ও মান সম্মানের ভয়ে আমি মেহেরপুর শহরে চলে আসি। এই মামলার এক নং আসামি মুক্তি, দুই নম্বর আসামি কালু ও তিন নম্বর আসামি ওমর আলী স্বাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। এছাড়া আশুরার স্বামী জয়নাল আবেদীনকে একাধিকবার শারীরিক নির্যাতন করে পঙ্গুপ্রায় করেছে। প্রধান আসামি মুক্তি দলীয় প্রভাবশালী হওয়ায় সাধারণ জনগণ ও প্রশাসন তার কথা মত চলতে বাধ্য হচ্ছেন। আমার সাংসারিক জীবন প্রধান আসামির জন্য দুর্র্বিষহ হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য যে, মেহেরপুর সদর উপজেলার রাজনগর গ্রাম আওয়ামীলীগ নেতা ও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মুক্তি একই গ্রামের জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী আশুরা খাতুনকে ২০১৫ সাল থেকে কু প্রস্তাব দিয়ে আসছে। তার কথা মেনে না নেওয়ায় আশুরার স্বামী জয়নাল আবেদীনের উপর নানাভাবে নির্যাতন ও অত্যাচার করে পঙ্গুপ্রায় করে রেখেছে। সম্প্রতি আশুরা খাতুন তার নিজ বাড়ি গেলে একা পেয়ে কালু ও ওমর আলীর সহযোগীতায় মুক্তি আশুরাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। পরে চিৎকার দিয়ে উঠলে মুক্তি সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে পালিয়ে যায়।এই ঘটনায় আশুরা খাতুন বাদী হয়ে মেহেরপুরের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল একটি পিটিশন মামলা করেন। যার পিটিশন নং ৯০/২৩, তারিখ ৬/৬/২৩ইং।
মেহেরপুর সদর থানার মামলা নং ২০, তারিখ ১২/০৬/২৩ ইং, ধারা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৯(৪)(খ)/৩০।