চুয়াডাঙ্গার আকন্দবাড়িয়া গ্রামে যুথি খাতুন (২৫) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে রহস্য। তদন্তে মাঠে নেমেছে পুলিশ। ময়না তদন্ত শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
স্থানীয় ও পরিবার সসুত্রে জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়া ফার্ম পাড়ার তমছেল আলীর মেয়ে যুথি খাতুনের সাথে ৯ বছর পূর্বে পারিবারিক ভাবে শরিয়া মোতাবেক বিয়ে হয় একই গ্রামের ঈদগা পাড়ার দেলবার ফকিরের ছেলে সেলুন ব্যাবসায়ী আব্দুর রহমানের সাথে।
তাদের কোল জুড়ে আসে একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান। দাম্পত্য জীবনে বিভিন্ন সময় কলহের সৃস্টি হয়। এরই মধ্যে প্রতিবেশি ইস্রাফিলের মেয়ে প্রিয়ার সাথে রহমান জড়িয়ে পড়ে পরকিয়ায়।
সে পরকিয়া প্রেমিকা প্রিয়ার সাথে প্রায় বছর খানেক পূর্বে দ্বিতীয় বিয়ে করে। দ্বিতীয় বিয়ের কথা জানাজানি হলে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে স্বামী আব্দুর রহমানের পারিবারিক কলহের সৃস্টি হয়। এ নিয়ে তাকে প্রতিনিয়ত শারিরিক নির্যাতন করতো। এরই এক পর্যায় নির্যাতন সইতে না পেরে যুথি স্বামী গৃহ ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে যায়।
দির্ঘদিন প্রথম স্ত্রী জুথি পিতার বাড়ি থাকার পর দ্বিতীয় স্ত্রী প্রিয়াকে তালাক দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে গত ১৫ দিন আগে রহমান তার প্রথম স্ত্রী যুথি খাতুনকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে নেওয়ার পর আবার শুরু হয় নিরব নির্যাতন।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাত্রে রহমান তার দ্বিতীয় স্ত্রী প্রিয়াকে তার বাড়িতে নিয়ে আসে এবং প্রথম স্ত্রী যুথি খাতুনকে বাহিরে রেখে তার প্রথম পক্ষের একমাত্র ছেলে আপনকে (৭) সাথে নিয়ে রাত্রি যাপন করে।
তাদের এহেন কর্মকান্ডে এলাকাবাসির মনে সন্দেহ সৃস্টি হয়। এলাকাবাসি ও স্বজনদের ধারণা রহমান ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী দু’জন মিলে যুথিকে হত্যার পর তার লাশ ঘরের আড়ায় ঝুলিয়ে রেখেছে।
তবে পুলিশের বক্তব্য ফরেনসিক রিপোর্ট আসলেই সব রহস্য বেরিয়ে আসবে। তবে নিহতের স্বজনদের অভিযোগ হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী আত্মগোপনে রয়েছেন।
এ ঘটনায় গ্রামবাসী হত্যাকারী আব্দুর রহমানের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবীতে ফুসে উঠেছে। লাশের ময়না তদন্ত শেষে রাত্র পৌনে ১১টার দিকে গ্রামের কবরস্থানে বেদনা বিধূর পরিবেশে দাফনকার্য সম্পন্ন করা হয়েছে।
এবিষয়ে দর্শনা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে । মামলা নং ১৩। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দর্শনা থানা পুলিশ।