আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের কতিপয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কিছু নেতৃস্থানীয় কর্মী একটি বিশেষ সংবাদ সম্মেলনের পূর্বে এমপি সমর্থিত নেতা কর্মিরা পূর্বে ঘোষিত জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সহ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের কতিপয় মনোনয়ন প্রত্যাশীগণ উপস্থিতে সম্মেলন বাধা দেয়ার চেষ্টা চালালে দর্শনা বাস স্ট্যান্ড এলাকা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের চেষ্টায় উভয়কে শান্ত থাকার অনুরোধ করলে এমপির পক্ষে দুরে অবস্থান নেয়।
পরিস্থিতি শান্ত হলে অপূর্ব ঘোষিত সংবাদ সম্মেলন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মন্জুর সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন,বীর মুক্তিযোদ্ধা চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ, তিনি লিখিত বক্তব্যের শুরুতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার সহধর্মিনী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব,জাতীয় চার নেতা শহীদ নজরুল ইসলাম, শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ, শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও শহীদ কামরুজ্জামান এবং জাতির গৌরব ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে যে ৩০ লক্ষ বাঙালি জীবন দিয়েছেন ও ২ লক্ষ মা বোন যারা সম্ভ্রম হারিয়েছেন তাদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাই। গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি এই চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের অন্তর্গত নাটুদহ ইউনিয়নের আট কবর, জীবননগর উপজেলাধীন ধোপাখালীর শহীদ স্মৃতিসৌধ ও দামুড়হুদা উপজেলাধীন পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের হৈবৎতপুর স্মৃতিসৌধে শায়িত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণকে।
এছাড়া এ অঞ্চলের অনেক বীর সন্তান যারা মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশ মাতৃকার জন্য অকাতরে জীবন দিয়েছেন- রক্ত দিয়েছেন তাদেরকেও গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শোষণ বঞ্চনামুক্ত, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যেই গোটা বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত করেছিলেন। দেশ স্বাধীনের মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই পাকিস্তানের প্রেতাত্মা ৭১ এর পরাজিত শক্তি তাদের আন্তর্জাতিক প্রভুদের সক্রিয় সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জন ও চেতনাকে ধ্বংস ও মুছে ফেলার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর প্রায় ৩০ বছরই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল। বাকি বছর গুলোতে স্বাধীনতার পক্ষের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জাতির পিতার সুযোগ্য সন্তান গণতন্ত্রের মানষকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার পরিচালনার সুযোগ পায়। সেই একই অপশক্তি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা জননেত্রী শেখ হাসিনা সহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময়ে দফায় দফায় মারাত্মকভাবে আক্রমণ করে। প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রেনেড হামলা করতে ও পিছপা হয়নি। আল্লাহ তাআলার অশেষ কৃপায় পিতামাতা ভাইবোন আত্বীয় স্বজন সবকিছু হারিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা জীবনে বেঁচে আছেন।জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাঙালি জাতির স্বপ্নের পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, উড়াল সেতু, এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ে, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর নিচে টানেল, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট স্থাপন, পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন, রেলওয়ে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন, সমুদ্র বিজয়, ছিট মহলে ভারতের সাথে সীমানা নির্ধারণ, পায়রা গভীর সমূদ্র বন্দর ইত্যাদি অসংখ্য বৃহৎ প্রকল্প এই সরকারের অর্জন।
এছাড়া লক্ষ লক্ষ গৃহহীন মানুষকে সরকারি জায়গায় ও খরচে গৃহ নির্মাণ করে গৃহহীনদের থাকার ব্যবস্থা করা, সার, ডিজেল কৃষকের নিকট সংক্ষলতা করা, কৃষি, শিক্ষা, শিল্প, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি সহ রাস্তাঘাটের সরকারের বড় অর্জন যে অর্জনের কথা শুধু বাংলাদেশের জনগণই নয় ইউরোপ, আমেরিকা, জাতিসংঘ, বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ সহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের স্বীকৃত। বাংলাদেশ আজ শুধু উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবেই পরিচিত নয়, বিশ্ব সভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত।
এছাড়া প্রতিটি জেলা ও উপজেলা শহরে ৫৬০ টি মডেল মসজিদ নির্মাণ ও দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স এর সমমর্যাদা দেওয়া এই সরকারের আর একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের সফল বাস্তবায়ন।
অবশ্যই, আমরা স্বীকার করি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য কোন কোন ক্ষেত্রে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার সকল স্তরের বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষ ভীষণ কষ্টে আছে। এই সমস্যাটি আজ বাংলাদেশেরই নয় বরং এটি বর্তমানে একটি বৈশ্বিক সমস্যা ও গভীর সংকট।
সারা পৃথিবী কোভিড-১৯ অর্থাৎ করোনা ভাইরাস কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ এবং বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরিণতি এই মূল্য বৃদ্ধির অস্বাভাবিকতা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী কিছু হাইব্রিড নেতাকর্মীর সীমাহীন দুর্নীতি কর্তৃত্ব পরায়ণ ও পরিবারকরণ মনোবৃত্তি ও দায়িত্বজ্ঞানহীন কিছু কর্মকাণ্ডে বর্তমান গণমুখী সরকারের গগনচুম্বী ভাবমূর্তি অনেকাংশেই ঘৃণা করেছে। দেশ, জনগন ও দলের স্বার্থের এদেরকে চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া এখন সময়ের দাবী।
পরীক্ষিত কর্মিদেরকে বাছাই করে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দিলে নির্বাচনি বৈতরণী যেমন পার হওয়া যাবে, সেই সাথে দেশ, দল ও দলের প্রাণশক্তি কর্মীরাও বাঁচবে।
একাত্তরের পরাজিত শক্তি তাদের পরীক্ষিত দোসর সারা দুনিয়ার শোষিত বঞ্চিত, নিপীড়িত গণমানুষের দুশমন আমেরিকা, বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থার উপর স্যাংশন ভিসা নীতি ইত্যাদির মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলো তাদের হীনস্বার্থে অস্থির ও অশান্ত করে চলেছে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের স্বার্থ রক্ষাকারী দলকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে যা আমাদের সকলের জন্যই গভীর উদ্বেগের কারণ।
চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের আপমর জনগনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ। ২০৪১ সালের মধ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ অর্থাৎ একটি আরো উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালি করতে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড কর্তৃক মনোনীত প্রার্থীর নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বর্তমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আহবান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন,মির্জা শাহরিয়া মাহমুদ লল্টু, ছাত্রনেতা ও সাধারণ সম্পাদক ঢাকাস্থ চুয়াডাঙ্গা জেলা সমিতি, ডঃ হামিদুর রহমান সাবেক মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নজরুল ইসলাম সভাপতি জীবননগর থানা আওয়ামী লীগ, আব্দুল লতিফ অমল সম্পাদক জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগ অ্যাডভোকেট শাহরিয়ার কবির সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, এয়ার কমান্ডার মোঃ আবু বক্কর সাবেক ভি পি দর্শনা সরকারি কলেজ, নুর হাকিম সম্পাদক ও প্রকাশক সকলের সময়।
বক্তব্য শেষে নেতারা যানান আগামি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপস্থিত দশ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষে আমরা হাতে হাত মিলিয়ে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করব।