চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায় মাসুমা জান্নাত মহিলা মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রীর রহস্য জনক মৃত্যু হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে। টাকা ও মোবাইল চুরির অভিযোগে একই মাদ্রাসার ৮২ জন ছাত্রীর চাল পড়া খাওয়ানো হলেও মৃত ছাত্রী তা খাইনি , এ জন্য কোন সমস্যায় তার মৃত্যু হয়েছে কিনা পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে । তবে তার বাবা সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন ঐ মাদ্রাসায় টাকা ও মোবাইল চুরির কথা শুনে বুধবার মেয়ে আনতে গিয়ে ছিলাম, কিন্তু বুধবার আমার মেয়ে আমার কাছে দিলে মা আমার মরতো না , সারারাত গুঁমড়ে কেদে কেদে পেট ফুলে মেয়ে আমার মৃত্যুবরণ করেছে । পুলিশ ও তার পরিবারের লোকজন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন গত ২০ অক্টোবর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার অন্তর্গত দর্শনা থানার কুন্দিপুর গ্রামের দুলাল হোসেন এর কন্যা আফসানা দোলা( ১০) ও একই গ্রামের আরিফুল ইসলাম এর কন্যা রাবেয়া খাতুন (১২) কে ঐ মহিলা মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি করান। কিন্তু মাদ্রাসায় পড়তে সে খুব বেশি রাজি ছিল না। ইতোমধ্যে গত শনিবার উক্ত মাদ্রাসা থেকে ২ হাজার ৭শ টাকা ও একটি মোবাইল চুরি হয়ে যায়। চোর ধরতে কতৃপক্ষ একই মাদ্রাসার ৮২ জন ছাত্রীর চাল পড়া খাওয়াই। আফসানা দোলা ছুটিতে বাড়ি থাকায় তাকে চাল পড়া খাওয়ানো সম্ভব হয়নি বলে সাংবাদিকদের জানান কতৃপক্ষ। বাড়ি থেকে রোববার সে মাদ্রাসায় আসার পর বিভিন্ন জনের কাছে থেকে নানা ধরনের কথা শুনে ছোট মানুষ দোলা কান্না করতে থাকে । গত বুধবার সন্ধ্যায় তাদের গ্রামের বাড়ির একটি অনুষ্ঠানের জন্য বাড়ির লোকজন রাবেয়া ও দোলাকে আনতে গেলে মাদ্রাসা কতৃপক্ষ জানান আজ না কাল সকালে নিয়ে যাবে । মা বাবার কাছে যেতে না পেরে ও এ কথা শোনা মাত্রই ১০ বছর বয়সী দোলা সারা রাতই গুঁমড়ে গুঁমড়ে কেদে মুর্ছা যায়। তার পর থেকে তার আর জ্ঞান ফেরেনি। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে স্থানীয় ডাক্তার নাজমুল হাসান এর কাছে নেয়া হলে, সে জানায় রোগীর কোন হার্টবিট পাইনি। পরে জীবননগর উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন । মাদ্রাসার অধ্যক্ষ গোলাম কিবরিয়া জানান টাকা ও মোবাইল চুরির ঘটনায় অন্য ছাত্রীদের চাল পড়া খাওয়ালেও দোলাকে খাওয়ানো হয়নি। তার মৃত্যুটি কি ভাবে হলো আমারা জানিনা। করোনার মধ্যেও কে ক্লাস হয় বলা হলে কোন কথার উত্তর দিতে পারেনি। দোলার বাবা দুলাল হোসেন জানান আমার শিশু বাচ্চা মেয়েটাকে যদি বুধবার সন্ধ্যায় আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিত তা হলে আর মৃত্যুটা হত না। আমার মেয়ে আমার জন্য কেদে কেদে পেট ফুলে মরেছে । দর্শনা থানার ওসি মো মাহবুবুর রহমান জানান বাদি পক্ষ এখনো কোন অভিযোগ করেননি। তবে মাদ্রাসায় টাকা মোবাইলফোন চুরি ও চাল পড়া খাওয়ানোর বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। তা ছাড়া দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর কেনো এইটা চলমান রাখা হয়েছে তাও দেখা হচ্ছে। উল্লেখ ২০১৬ সালে মাসুমা জান্নাত মহিলা মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর পুরুষ শিক্ষক দিয়ে তৃতীয় শ্রেণী থেকে স্নাতক পর্যন্ত ছাত্রী পড়ানো হচ্ছে, যা অনেকই আলোচনা সমালোচনা করে চলেছেন৷