দর্শনা কেরুজ চিনিকলের চিনি উৎপাদন মৌসুম চালু অবস্থায় বিভিন্ন কৃষি কামারের মূল্যবান গাছ কর্তন করার অভিযোগ ওঠে বীজ পরিদর্শন ও কৃষিতত্ব বিভাগের ব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে।
এনিয়ে পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশ পেলে কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তর বিরুদ্ধে গাছ কাটার কৈফিয়াত তলব করে নোটিশ প্রদান করেন। তিন দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দেবার নির্দেশ দেয়া হলেও তিন দফা কাটছাট করে ১৪ দিন পর ছায় দিয়ে মাছ ঢেকে প্রতিবেদন জমাদেন অভিযুক্ত কর্মকর্তা।
আর নির্দেশ মোতাবেক নিজের মতকরে প্রতিবেদন পেয়ে অনেকটায় খুশি এমডি মোশারফ হোসেন। অনেকেই মন্তব্য করে বলেছেন, রসুনের নিচ একজায়গায়। বিষয়টি প্রধান কার্যালয়কে তদন্ত করার দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।
জেলার একমাত্র সরকারি ভারিশিল্প প্রতিষ্ঠান এবং অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি দর্শনা কেরুজ চিনিকলটি। যার সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত মানুষের রুটি রুজি। জনশ্রুতি রয়েছে এই প্রতিষ্ঠান রক্ষা করতে কারো প্রাণ কাঁদে।
আবার কেউ সুযোগবুঝে আখের গোছানোর কাজে ব্যবস্থ থাকেন। দীর্ঘদিন থেকে চলে আসছে এ প্রক্রিয়া। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাবাবুরা কে কি ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তা অনেকেরই জানা। চিনিকলসূত্রে জানাগেছে, মাড়াই মোরসুম শুরু হওয়ার আগে থেকেই বয়লারের জ্বালানির জন্য খড়ি ক্রয় করে থাকে প্রতিষ্ঠান।
তারি ধারাবাহিকতায় ২০২০-২১ মাড়াই মোরসুমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠনের নিকট থেকে ১১শ মেট্রিকটন খড়ি ক্রয় করে। মাড়াই কার্যদিবস শেষ হবার ১৮ দিন আগেই ক্রয়কৃত খড়ি শেষ হয়ে যায়। মাড়াই কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে নিজেস্ব বিভিন্ন কৃষি খামার থেকে শুকনা গাছ ও গছের ডাল কাটার নির্দেশ দেয় ।
এলক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ বীজ পরিদর্শন ও কৃষিতত্ব বিভাগের ব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেনকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট গাছকাটা কমিটি গঠণ করে দেন। অভিযোগ উঠেছে কমিটির প্রধান দেলোয়ার হোসেন ও আকন্দবাড়িয়া বীজ উৎপাদন খামার ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম টুটুল মরাগাছ এবং গাছের ডালকাটার অযুহাতে বিভিন্ন কৃষি খামারের মূল্যবান গাছ কেটে ফেলেন।
কর্তনকৃত গাছের কিছু অংশ বয়লারের জ্বালানি হিসাবে চিনিকলে সরবরাহ করলেও মূল্যবান অংশ আত্নসাৎত করেছেন বলে গুঞ্জণ ওঠে। শুধু তাই নয় গাছ কাটার জন্য অর্থ বিভাগ থেকে ২ লাখ টাকা অগ্রীম উত্তলনও করেন দেলোয়ার হোসেন। এ নিয়ে পত্রিকায় ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশিত হলে কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কৈফিয়াত তলব করে নোটিশ প্রদান করা হয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।
সূত্র জানিয়েছে, তিন দিনের মধ্যে জবাব চাওয়া হলেও কর্তৃপক্ষের নিজের মত প্রতিবেদন না হওয়ায় দফায় দফায় তা কাটছাট করে ১৪ দিন পর প্রতিবেদন দাখিল করেন অভিযুক্তরা। আর শাখ দিয়ে মাছঢাকা নিজের পছন্দ মত প্রতিবেদন হাতে পেয়ে খুশিই হয়েছেন চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন।
প্রতিবেদনের ব্যাপারে অনেকেই মন্তব্য করে বলেন, রসুনের নিচ সব একজায়গায়। প্রতিষ্ঠানের অনেক ঘটনায় ঘটে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে লোক দেখানো কমিটি গঠণ এবং অভিযুক্তদের কি ভাবে নিরাপদ করা যায় এমন নির্দেশনাই দেয়া হয় উপর থেকে। গাছ কাটার ক্ষেত্রেও এমনটিই ঘটেছে।
বিষয়টি সদর দপ্তরকে তদন্তের দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল। এব্যাপারে চিনিকলের ব্যবস্থপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনকে মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।