আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেছেন, যারা আওয়ামী লীগ করেন, তারা যদি কোন অপকর্ম করে তাহলে ব্যক্তির অপকর্মের দায়ভার আওয়ামী লীগের উপর বর্তায়। দোষ করে ব্যক্তি বিশেষ, গালি খায় দল ও দলের শীর্ষ নেতারা। দলে যদি সাহেদ-সাবরিনাদের মতো কেউ থেকে থাকে তাহলে তাদের ঝেটিয়ে বিদায় করতে হবে। কারণ ব্যক্তির দোষের কারণে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার রাতদিন পরিশ্রম বিফলে যেতে পারে না।
সোমবার দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কৃষক লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, এতিম শিশুদের মধ্যে মৌসুমী ফল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা শুধু ব্যক্তি হত্যা নয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হত্যা করতে চেয়েছিল। জিয়াউর রহমান ছিলেন পাকিস্তানের এজেন্ট ছিলেন। কারণ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কর্নেল বেগ জিয়াউর রহমানকে চিঠি দিয়েছিল। কর্নেল বেগ, পরবর্তীকালে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান হয়। জমির বেগ লিখেছিল, তোমার ছেলে ও বউ ভালো আছে। তুমি যুদ্ধ চালিয়ে যাও। মেজর জলিল সম্পর্কে সতর্ক থেকো। এতেই বোঝা যায় জিয়া পাকিস্তানের এজেন্ট ছিল।
তিনি বলেন, বিএনপি এখন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কথা বলে? অথচ তারাই জাতির পিতার হত্যার বিচার চাওয়া যাবে না মর্মে ইনডেমনিটি দিয়েছিল। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে অপারেশন ক্লিন হাটের নামে ১২৮ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করলো। পরে কেউ এই হত্যার বিচার চাইতে পারবে না, মর্মে আইন করলো।
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে সরাসরি তারেক রহমান দাবি করে কামাল বলেন, যদি জড়িত না হয় তাহলে পিন্টুর ভাইকে কেন বিদেশ পাঠানো হলো? সেনাবাহিনীর একজন বলল চারটি গ্রেনেড উদ্ধার হলো? সে গ্রেনেডগুলো কোথায় গেল? তদন্ত করা হলো না কেন?
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, জাতির পিতা চির অমর হয়ে থাকবেন। তাকে ভোলা সম্ভব নয়। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, একটু স্বাধীন ভূখণ্ড প্রদানের জন্য। বিধ্বংস দেশকে যখন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেই দিলের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে-এজন্য আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে সতর্ক থাকতে হবে। জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছিল পাকিস্তানের পরাজিত হওয়ার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের উত্তরসূরীরা এখনো সক্রিয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্র কি থেমেছে? আগস্ট মাসেও সেই উল্লাস দেখেছি। তারেক রহমানের কারণেই একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করা হয়েছিল।
কৃষকলীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ বলেন, কৃষক লীগের সভাপতি সরকারিভাবে ধান চাল ক্রয় করার সময়ে সরকারি ধান চাল ক্রয় বিভিন্ন কমিটিতে কৃষক প্রতিনিধি রাখার দাবি জানান। একই সঙ্গে শোককে শক্তিতে রূপান্তিত করে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি বলেন, জাতির পিতার হত্যার বিচার বন্ধে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি ১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বাতিল করে। সে সময় বিচারের পথ খুলে দেয়। তখন জাতির পিতার ঘনিষ্ঠজন মহিতুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন এবং এ মামলা আংশিক রায় কার্যকর করে বাকি ৫ জন পলাতক খুনিকে দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবি জানান।
ঢাকা মহানগর উত্তর কৃষক লীগের সভাপতি মাকসুদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হালিম খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কৃষক লীগের নেতা সাবেক বিশ্বনাথ সরকার বিটু, আবুল হোসেন, নেতা মোস্তফা কামাল চৌধুরী, আলহাজ্ব আকবর আলী চৌধুরী, অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম পানু, এ্যাড. গাজী জসিম উদ্দিন, রেজাউল করিম রেজা, হিজবুল বাহার রানা, অধ্যাপক ডা. মজিবুর রহমান মিয়াজী, কৃষ্ণ গোপাল পাল, সামিউল বাসির সামি প্রমুখ।
সূত্র- বিডি প্রতিদিন