দামুড়হুদায় ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে পাকা আমন ধান গাছ, আগাম ভুট্টার লাগানো বীজ ও চারা পেঁপেঁ,কলাসহ সব্জি চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
গত বৃহস্পিতিবার (২৪ শে অক্টোবর) দপুর থেকে আজ শনিবার (২৬শে অক্টোবর) ভোর পর্যন্ত থেমে থেমে প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় কৃষকদের ক্ষেতের আগাম ভুট্টার লাগানো বীজ ও গাছের চারা, তুলা, মরিচ, ফলন্ত পেঁপেঁ গাছ,কলাগাছ ভেঙ্গে পড়েছে এছাড়া ও ক্ষেতের পাকা কাচা ধান ডুবে গেছে ও পড়ে গেছে।
দুই দিনের বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে দামড়হুদার আশপাশ এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠের পাকা আমন ধানগাছ নুয়ে পড়েছে। পাকা আমন ধান ঘরে তোলার এখনই মোক্ষম সময়। কিন্তু বৃষ্টিতে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপর দিকে ভুট্টা লাগানোর এখনই মোক্ষম সময় গত কিছুদিন ধরে চাষীরা তাদের জমিতে ভুট্টার বীজ লাগিয়েছেন এবং ভুট্টা লাগানোর জন্য জমি প্রস্তুত করছেন টানা বৃষ্টির কারণে আগামী দুই থেকে তিনদিনের মধ্যে রোদ না হলে এসব ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়া ও আবাদ নাবি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান কৃষকরা।
আজ শনিবার সকালে দামুড়হুদা সদর, দেউলী, চিৎলা, গোবিন্দহুদা, হাউলি, জয়রামপুর, তারিনীপুর ও কেশবপুরের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের কারণে অনেক স্থানে পাকা ও আধাপাকা ধানগাছ, তুলা গাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে, ফলন্ত পেঁপে গাছ উপড়ে পড়েছে, আগাম লাগানো ভুট্টার বীজ ও চারা পানিতে ডুবে গেছে মরিচ, বাঁধাকপি, ফুলকপির চাষকৃত জমিগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে এতে ক্ষেতের ফসল নিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
দামুড়হুদা উপজেলা সদরের দশমী স্টেডিয়াম পাড়ার কৃষক নুরুল ইসলাম জানান, দেউলী গ্রামের নদীর ওপারের মাঠে তার ১০ কাঠা জমিতে পেঁপেঁ বাগান ও ১ বিঘা জমিতে কলা বাগান ছিল পেঁপেঁ ও কলা মিলে প্রায় ৮০ শতাংশ গাছ ভেঙ্গে পড়েছে এছাড়াও জমির আইলে লাগানো বড় বড় মেহগনি গাছ ছিল সেগুলো মাজা থেকে ভেঙে গেছে, ১০ কাঠা জমিতে লাগানো ভুট্টার বীজ পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে তার লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত বছর এসব ফসলের ভালো দাম পাইনি। এসব নিয়ে হতাশায় ছিলাম। কিন্তু এবার ঝড়বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল।
কথা হয় গোবিন্দহুদা গ্রামের কৃষক ডালিম মিয়ার সাথে কাতলা মারির মাঠে তার প্রায় দেড় বিঘা জমিতে গত বুধবার লাগানো ভুট্টার বীজ পানিতে তলিয়ে গেছে, প্রায় এক বিঘা জমির পানের বরজ হেলে গেছে এতে তার আবাদকৃত ফসল নষ্ট হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে আমার উপজেলায় কৃষকদের বিভিন্ন ফসলের বিশেষ করে আমন ধান ও ভুট্টার চারার যে ক্ষতি হয়েছে আগামীতে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছি।আমি উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের বলেছি দ্রুত ক্ষয়ক্ষতির তালিকা নিরূপণ করতে,আমরা যেন দ্রুত কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে পারি।যে সমস্ত কৃষকদের ধান পেকে গেছে তারা যেন দ্রুত ধান কেটে রোদে শুকাতে দেয়।