দামুড়হুদায় আলুর লক্ষমাত্রা অর্জন হলেও আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় কৃষকরা শঙ্কিত। চলতি মৌসুমে খাদ্যে উদ্বৃত্ত দামুড়হুদা উপজেলাতে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলাতে আবহাওয়ার বৈরী আচরণ ও রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ না হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বছরে আলুর ফলন ভালো হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। বাজারে আলুর দাম না থাকায় কৃষক সমাজ শঙ্কিত। চড়াদামে বীজ, সার কিনে আলু লাগিয়ে কৃষকের খরচের টাকা তুলতেও খাচ্ছেন হিমসিম।
গত বছর ফলন ভালো না হওয়ায় বছর জুড়ে আলুর দাম ছিল বেশ চড়া। তবে অধিক লাভের আশায় দামুড়হুদা উপজেলার কৃষকরা ব্যাপকভাবে আলু চাষে ঝুঁকে পড়েন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে যায়, এ উপজেলাতে গত বছরে ৩৯০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়। সে তুলনায় এবার লক্ষমাত্রা ধরা হয় ৩৯০ হেক্টর, চলতি মৌসুমে লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে অর্জন করা হয় ৪৭৯ হেক্টর জমির আলু। উপজেলাতে এবার ৫ জাতের আলু চাষ করেছেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এবারে আলু উৎপাদন মৌসুমে আলুর তেমন কোনো রোগ-বালাই লক্ষ্য করা যাননি, গাছও হয়েছে চমৎকার, বিঘা প্রতি জমিতে আলু উৎপাদন হয়েছে ৯০-১২০ মন ।
উপজেলা সদরের কৃষক ফকির জানান, আমি প্রায় ৩ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়ে ছিলাম, ফলনো ভালো হয়েছে। তবে আলুর বাজার মূল্য খুব কম। প্রতি মণ আলু পাইকারি বিক্রয় হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা। খুচরা কেজি বিক্রয় করা হচ্ছে ১০-১৫ টাকা দরে।
অপর আর এক কৃষক জানান, সার ও বীজসহ অন্যান্য খরচ বাবদ প্রতিবিঘা জমিতে আলু লাগাতে খরচ হয়েছে ২০-২৫ হাজার টাকার মতো।
উপজেলা কৃষক সংগঠনের সভাপতি সামসুল ইসলাম দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিনকে বলেন- এবার দামুড়হুদা উপজেলার কৃষকরা অধিক মুনাফা অর্জনের লক্ষে কষ্ট করে আলু চাষ করেছেন, তবে সে তুলনায় আলুর বাজারে দাম অনেক নিন্ম হওয়াতে কৃষকরা হতাশায় রযেছেন। কৃষক এবারের আলু চাষে ক্ষতিতে থাকবেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান বলেন চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুতে তেমন কোনো রোগ বালাই হয়নি। ফলে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে, তবে বাজারে আলুর দাম পড়ে যাওয়ায় কৃষকরা আলুতে এবার বেশি লাভবান হবেন না। দাম কম হলেও ফলন বেশি হওয়াতে পুষিয়ে যাবে। তবে হিমাগার গুলিতে নির্দেশনা মেনে ঠিক সময়ে পুষ্ট আলু মজুদ করতে পারলে আগামীতে আলুর দাম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবারে আলুর যা ফলন হয়েছে, তাতে অতীতের সমস্ত রেকর্ড ছাড়িয়ে গিয়েছে।