করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দিন আনে দিন খায় এ শ্রেণির মানুষদের মাসিক পাঁচ হাজার টাকা হারে প্রাথমিকভাবে তিন মাসে জনপ্রতি ১৫ হাজার টাকা নগদ সাহায্য দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, করোনা থেকে বাঁচতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দিন আনে দিন খায় এ শ্রেণির মানুষের মাসে পাঁচ হাজার টাকা হারে প্রাথমিকভাবে তিন মাসে জনপ্রতি ১৫ হাজার টাকা নগদ সাহায্য-সহায়তা সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে পৌঁছানো নিশ্চিত করতেই হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এছাড়া কর্মহীন ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র ও রান্না করা খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনোভাবেই রাজনৈতিক দলের সদস্যদের এ কাজে সম্পৃক্ত করা যাবে না।
করোনা পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে টাস্কফোর্স গঠনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অবিলম্বে প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ সমন্বেয়ে একটি ট্রাস্কফোর্স গঠন করা অত্যন্ত জরুরি।
নগদ অর্থ ও ত্রাণ বিতরণ এবং ধান ক্রয় সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে করানোর আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে ত্রাণ চুরি এবং স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতিকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
ত্রাণ ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা অনিয়ম তুলে ধরে তিনি বলেন, দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। এখনো নিয়মিত দেখা যাচ্ছে ৬৪ জেলাতেই অভুক্ত মানুষ রাস্তা আটকে খাবার বা ত্রাণের জন্য বিক্ষোভ করছে। চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বাড়িঘর ঘেরাও করছে, রাস্তায় ত্রাণের গাড়ি থামিয়ে ত্রাণ লুট করে নিয়ে যাচ্ছে।
ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, অভিযোগ উঠেছে এমন আলোচিত ২৬টি ঘটনায় জড়িত ছিলেন ৪৫ জন যাদের সিংহভাগই সরকারি দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এহেন পটভূমিকায় সরকারদলীয় যারা ত্রাণ চুরি করছে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কড়া ব্যবস্থা না নিয়ে চাল চুরির সংবাদ ছাপানোর কারণে সাংবাদিক ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-এ মামলা হচ্ছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৬ মাসের বেতন দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসাসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছয় মাসের শিক্ষা ব্যয় (ছাত্র বেতন ইত্যাদি) সরকারকে বহন করতে হবে। সব লিল্লাহ বোর্ডিং, এতিমখানা ও বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে আগামী তিন মাসের জন্য খাবারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
দোকানপাট খুলে দেয়ায় সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, রমজান ও ঈদের কথা বলে ১০ মে থেকে দোকানপাট খুলে দিচ্ছে সরকার। এতে করোনার পিক পয়েন্টে এসে সরকার পুনরায় সামাজিক সংক্রমণের পথ আরও সুগম করে দিল। গার্মেন্ট সেক্টরে সৃষ্ট ঝুঁকির সঙ্গে দোকানপাট খুলে দেওয়ার ফলে সম্ভাব্য ঝুঁকি অগ্নিতে ঘৃতাহুতির মত কাজ করবে। সূত্র-বাংলাদেশ প্রতিদিন